পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১২৭
মঘরাজের মুকুট প্রেরণ

ইহার মর্ম্ম অবগত হন। পত্র পাঠের পর যখন রাজমুকুট কুমারদের সম্মুখে বাহির করা হইল তখন ইহার গায়ের বহুমূল্য রত্নগুলি ঝল্‌মল্ করিয়া উঠিয়া এক অপূর্ব্ব দীপ্তি ছড়াইল। ইহাতে কুমারদের চক্ষু ঝল্‌সিয়া গেল, জ্যেষ্ঠ বলিয়া মান্য রহিল না। অমর ও যুঝা সিংহের মধ্যে মুকুট লইয়া কাড়াকড়ি পড়িয়া গেল, বিজয়ী রাজপুত্র বলিয়া সকলেই মুকুট পরিতে চাহিলেন। দূত এই সুযোগে শিবিরের চারিদিক ঘুরিয়া সেনা সংখ্যার পরিমাণ মঘরাজের অভিপ্রায় অনুযায়ী জানিয়া লইয়া বিদায় হইল।

 দূত মুখে কুমারদের বিবাদের সংবাদ এবং ত্রিপুরসৈন্য সংখ্যার পরিমাণ অবগত হইয়া মঘরাজ আর কালবিলম্ব করিলেন না। কুমারদের মধ্যে তিনি বিবাদের বীজ (apple of discord) রোপণ করিয়া বন গহন দিয়া স্বসৈন্য চালনা করিলেন, নিজ নিজ আস্ফালনে মত্ত কুমারদের মুকুটের নেশা তখন টুটিয়া গেল। যখন ভীত সন্ত্রস্ত প্রহরী আসিয়া নিবেদন করিল যে মঘ সৈন্য ত্রিপুর সেনাবাসের অতি সন্নিকটে; চারিদিকে হুলস্থূল পড়িয়া গেল। যুঝাসিংহ বীরদৰ্পে যুদ্ধ করিতে রওনা হইলেন, তাঁহার বীররস দেখিয়া সকলেই ভয় পাইলেন কিন্তু যুঝাকে বুঝান গেল না। যুঝাকে যখন ছত্র নাজির এইরূপ হঠকারিতা দেখাইতে নিষেধ করিলেন তখন যুঝা বীররসের অভিনয় করিয়া উত্তর দিলেন—ছত্রনাজির যেন স্ত্রীলোকের ন্যায় শঙ্খ বস্ত্র পরিয়া ঘরে চলিয়া যায়।