পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

৸৴৹

 রাজমালায় ত্রিপুরার পুরা কাহিনী বৈদিক যুগের প্রান্ত হইতে নির্গত হইয়াছে এবং তাহা কবিতায় বর্ণিত হইয়াছে। স্বীয় জয় পরাজয় ও দোষগুণের প্রবেশ দ্বারা ইহা যথার্থ ভাবেই বলা হইয়াছে মনে করা যাইতে পারে। আমি আমার ক্ষুদ্র শক্তিতে রাজমালার সেই কবিত্ব রূপকথার ভাষায় ইতিহাসের আকারে ফুটাইতে চাহিয়াছি, এক্ষণে ইহা কোমলমতি বালকগণের উপযোগী হইলেই শ্রম সার্থক জ্ঞান করিব।

 এই গ্রন্থ স্বর্গীয় কালীপ্রসন্ন বিদ্যাভূষণ সম্পাদিত রাজমালার পাঠ অনুযায়ী মহারাজ কল্যাণমাণিক্য অবধি রচিত হইয়াছে, তৎপরের অংশ গোবিন্দমাণিক্য হইতে কৃষ্ণকিশোরমাণিক্য পর্য্যন্ত পণ্ডিত শ্রীযুক্ত চন্দ্রোদয় বিদ্যাবিনোদ সম্পাদিত রাজমালা অবলম্বনে রচিত। স্বর্গীয় বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের ঐতিহাসিক তথ্য দ্বারা বিশেষ উপকৃত হইয়াছি তজ্জন্য সর্ব্বপ্রথমে তাঁহার অমর আত্মার নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেছি।

 এতৎ প্রসঙ্গে সাহিত্য জগতে সুপরিচিত কৈলাসচন্দ্র সিংহ মহাশয়ের নামোল্লেখ করা একান্ত কর্ত্তব্য। বহুবর্ষ পূর্ব্বে যখন বাঙ্গালা ভাষায় বর্ত্তমানের ন্যায় ঐতিহাসিক গবেষণার পথ সুগম ছিলনা তখনকার দিনে সুমার্জ্জিত ভাষায় তিনি তাঁহার “রাজমালা” প্রণয়নে বঙ্গ সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট দান রাখিয়া গিয়াছেন। তাঁহার গবেষণা মূলক গ্রন্থ হইতে আমি অনেক সহায়তা লাভ করিয়াছি। দ্বিতীয় রাজধরমাণিক্য হইতে কৃষ্ণকিশোরমাণিক্য পর্য্যন্ত মূল রাজমালার রচনা পরিপাট্যহীন ও অনেক স্থলেই একরূপ দুর্ব্বোধ্য। সিংহ মহাশয়ের রচনা পাঠ দ্বারা ঐ ঐ অংশের ভাব গ্রহণ অনেক সময়ই সম্ভবপর হইয়াছে। কৃষ্ণকিশোরমাণিক্যের পরবর্ত্তী রাজগণের বিবরণ লইয়া আর রাজমালার নূতন ভাগ রচিত হয় নাই। সিংহ মহাশয়ের গ্রন্থ হইতে ঈশান চন্দ্রের