পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৪৪
কল্যাণমাণিক্যের অভিষেক

 ১৬২৬ খৃষ্টাব্দে শুভদিনে ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা যথারীতি কল্যাণমাণিক্যের অভিষেক কার্য্য সম্পন্ন করিলেন। মঙ্গলবাদ্য বাজনায় রৌশনচৌকির রং পরঙে উদয়পুর ভরিয়া উঠিল, আবার মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খঘণ্টা রব নিনাদিত হইল, চারিদিকেই আনন্দের হিল্লোল, পুর-লক্ষ্মীর আবির্ভাবে নগরী হাসিয়া উঠিয়াছে। অভিষেক সমাধা হইলে ত্রিপুর সেনা মুক্ত কৃপাণে মহারাজকে অভিবাদন করিল। তখন মহারাজ কালিকাপ্রসাদ নামক রাজহস্তী চড়িয়া সহর পরিভ্রমণে বাহির হইলেন। পথে পথে ধনরত্ন বিলাইয়া দেওয়া হইল, ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণকে অকাতরে অর্থদান করা হইল।

 রাজপদে সমাসীন হইয়া কল্যাণমাণিক্য প্রথমেই সেনা বাহিনীর পুনর্গঠনে মন দিলেন। বিচ্ছিন্ন ত্রিপুর সৈন্য পুনরায় তাঁহার রাজচ্ছত্র তলে সমবেত হইল এবং জন্মভূমির উদ্ধার সাধনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়া কঠোর অস্ত্রশিক্ষা করিতে লাগিল। এদিকে মহারাজ স্বপ্নে দেখিলেন কালিকাদেবী তাঁহার দেবালয় মূলে সরোবর খননে আদেশ করিতেছেন। ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণের পরামর্শ ক্রমে শুভদিনে মহারাজ পুষ্করিণী খনন আরম্ভ করাইলেন, উহাই “কল্যাণসাগর” নামে পরিচিত। ত্রিপুরাসুন্দরী দেবীর মন্দিরের সন্নিহিত পূর্ব্বদিকে ইহা অবস্থিত। মঘ আক্রমণ কালে ঐ মন্দিরের চূড়া শত্রুরা ভাঙ্গিয়া ফেলিয়াছিল, পুনর্ব্বার মহারাজ উহার সংস্কার সাধন করেন। তৎপর যে সব দীঘি মোগলেরা ধনরত্নের লোভে খাল কাটিয়া