পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৪৫
কল্যাণমাণিক্যের অভিষেক

শুকাইয়া ফেলিয়াছিল, সেগুলির পুনরুদ্ধার করেন। জলাশয়গুলি নির্ম্মল জলে ভরিয়া উঠায় উদয়পুরের পূর্ব্ব সৌন্দর্য্য ফিরিয়া আসিল এবং স্বাস্থ্যসুখে জলস্থল পূর্ব্ববৎ সমৃদ্ধ হইয়া উঠিল।

 কল্যাণমাণিক্যের প্রথমা মহিষীর গর্ভে গোবিন্দ ও জগন্নাথ, দ্বিতীয়া মহিষীর গর্ভে নক্ষত্র রায় ও কনিষ্ঠা মহিষীর গর্ভে যাদব ও রাজবল্লভ নামে পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। কুমারেরা যুদ্ধ বিদ্যায় নিপুণ হইয়া উঠিলেন। উদয়পুরের পূর্ব্ব-উত্তর কোণে আচরঙ্গ বহুকালের প্রসিদ্ধ সীমান্তদেশ, গোমতীর উৎপত্তিস্থল ডম্বুরের সন্নিহিত মাইনি পর্ব্বতের পূর্ব্বভাগে আচরঙ্গ নদী আছে—উহা চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে যাইয়া মিশিয়াছে। আচরঙ্গ বহুকাল ত্রিপুরা রাজ্যের সীমারূপে পরিগণিত ছিল। উদয়পুর মোগল অধিকৃত হইলে রণজিৎ সেনাপতি আচরঙ্গ যাইয়া নিজকে রাজা বলিয়া প্রচার করিলেন। কালক্রমে রণজিতের মৃত্যু হইলে তৎপুত্র লক্ষ্মীনারায়ণ পিতার অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখিতে যত্নশীল হন। ইহাতে কল্যাণমাণিক্যের ক্রোধের সীমা রহিল না, তাঁহার বাহুপাশ এড়াইয়া বিদ্রোহ করা অসীম সাহসের কথা।

 মহারাজের আদেশে গোবিন্দনারায়ণ, লক্ষ্মীনারায়ণের বিরুদ্ধে অভিযান যাত্রা করিলেন। দুর্গম পর্ব্বত মধ্য দিয়া ত্রিপুরসৈন্য একমাস কাল কাটাইয়া আচরঙ্গ প্রান্তে পৌঁছিল। লক্ষ্মীনারায়ণ এই বার্ত্তা শুনিয়া ব্যস্তসমস্তে রাজ্য ছাড়িয়া আরও গভীরতর পর্ব্বতে গা ঢাকা দিলেন। সেস্থান আচরঙ্গ হইতে তিন দিনের পথ। আচরঙ্গ গড়ে কিছু সৈন্য রাখিয়া গোবিন্দ

১০