পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৫৩
 

গোবিন্দমাণিক্য ও
নক্ষত্র রায়

তাঁহার হস্তে ত্রিপুরার দাজদণ্ড ন্যস্ত হওয়ায় সকলের চিত্তে আশার সঞ্চার হইয়াছিল। কিন্তু ঈর্ষীর মনে তাহাতে সুখ হয় না, তাঁহার বৈমাত্র ভ্রাতা নক্ষত্ররায়ের মনে রাজ্যলোভ ক্রমেই প্রবল হইতে লাগিল। রাজপুত ইতিহাসে রাণা প্রতাপের সহিত শক্ত সিংহের যে সম্বন্ধ দাঁড়াইয়াছিল, গোবিন্দমাণিক্যের সহিত নক্ষত্ররায়ের সেই সম্বন্ধ সৃষ্টি হইল। গোবিন্দমাণিকের কানে নানা কথা ভাসিয়া আসিতে লাগিল। নক্ষত্ররায়কে ঘেরিয়া চক্রান্তকারীদের সাহায্যে ষড়যন্ত্রের জাল ক্রমেই জটিল হইয়া উঠিল। রাণা প্রতাপকে সমুচিত শাস্তি দিবার জন্য শক্ত যেমন আকবরের শরণাপন্ন হইয়াছিলেন, নক্ষত্ররায়ও তেমনি মোগল দরবাৱে আশ্রয়প্রার্থী হইয়াছিলেন।

 ভ্রাতৃবিরোধের করালছায়াপাতে ত্রিপুর-রাষ্ট্রের শান্তি সুখ অন্তর্হিত হইতেছিল। সে সময়ে সাজাহান-পুত্র সুজা বাঙ্গালার শাসন কর্ত্তা, নক্ষত্ররায় তাঁহার সহিত রাজদ্রোহমূলক সম্বন্ধ স্থাপনে অগ্রসর হইয়াছেন দেখিয়া গোবিন্দমাণিক্যের উদার হৃদয় ব্যথিত ও বিচলিত হইল। ‘রাজর্ষি’তে রবীন্দ্রনাথ তাঁহার অমর লেখনী দ্বারা গোবিন্দমাণিক্যের অপূর্ব্ব স্বদেশ প্রীতি ও অতুলনীয় আত্মত্যাগ ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। অভিষেক হইবার কয়েক মাস মধ্যেই গোবিন্দমাণিক্য যখন বুঝিতে পারিলেন, নক্ষত্ররায় রাজমুকুটের লোভে স্বদেশের সর্ব্বনাশ ঘটাইবে তখন তিনি রাজর্ষির ন্যায় সর্ব্বস্ব ত্যাগে কৃতসঙ্কল্প হইলেন! পাত্রমিত্র মন্ত্রী সভাসদ্ সকলের পরামর্শ অনায়াসে