পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

রাজমালা

গোবিন্দমাণিক্যের পুনরভিষেক

(৭)

গোবিন্দমাণিক্যের পুনরভিষেক

 সুজার ভাগ্যে অদৃষ্টের অন্ধকার-রাত্রি আর পোহাইল না কিন্তু গোবিন্দমাণিক্যের দুর্ভাগ্য রজনী প্রভাত হইল। সাত বৎসর রাজত্ব করিয়া নক্ষত্ররায় পরলোকগমন করেন, এ সংবাদ শীঘ্রই চতুর্দ্দিকে প্রচার হইয়া গেল। মঘরাজ যখন এ সংবাদ পাইলেন তখন গোবিন্দমাণিক্যকে রাজসভায় ডাকাইয়া আনিলেন—“মহারাজ, আপনার দুঃখের দিন ফুরাইয়াছে এখন ত্রিপুরা অভিমুখে যাত্রা করুন। নক্ষত্ররায়ের মৃত্যুতে সিংহাসন শূন্য হইয়া পড়িয়াছে, এ সিংহাসন আপনার, অপর কাহারও ইহাতে অধিকার নাই।” এই বলিয়া মঘরাজ গোবিন্দমাণিক্যকে প্রচুর উপঢৌকন দিয়া বিদায় করিলেন। মঘরাজের আগ্রহ ও সৌজন্য দৃষ্টে ইহাই মনে হয় যদি সৈন্য সাহায্যের প্রয়োজন হইত তবে আরাকানপতি তাহাতেও কুণ্ঠিত হইতেন না।

 রাণী গুণবতী ও পরিজনসহ মহারাজ রসাঙ্গ ত্যাগ করিয়া চট্টগ্রাম আসিলেন। সমতল ক্ষেত্রে পৌঁছিতেই উদয়পুর হইতে প্রেরিত দূতগণ আসিয়া মহারাজের চরণ বন্দনা করিয়া নক্ষত্র রায়ের পরলোক-প্রাপ্তি-সংবাদ জানাইল। মহারাজ যখন বুঝিতে পারিলেন যে তাঁহার আগমন প্রতীক্ষায় ত্রিপুরবাসী পথ চাহিয়া আছে তখন তাঁহার দ্বিধা কাটিয়া গেল।