পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৭৪
দ্বিতীয় রত্নমাণিক্য

প্রত্যাবর্ত্তন করিবার জন্য রাজদূত পাঠাইয়া দিলেন। রাজদূত রত্নমাণিক্যকে পত্র দিল।

 পত্র পাঠে রত্নের মনে হইল, নরেন্দ্র যাহা লিখিয়াছেন সবই সত্য, তাঁহার অভাবে উদয়পুর নরেন্দ্রের নিকট প্রাণহীন ঠেকিতেছে, রত্নের আগমনে পুনরায় নগরে প্রাণের স্পন্দন ফিরিয়া আসিবে। এই ভাবিয়া রত্ন ফিরিতে কৃতসঙ্কল্প হইলেন। তাঁহার পরিজনবর্গ প্রতিকূলে অনেক বুঝাইল, কিন্তু কোন ফল হইল না।

 রত্নমাণিক্যকে প্রত্যাবর্ত্তনে কৃতনিশ্চয় বুঝিয়া পাত্র মিত্র মন্ত্রী সকলেই রাজার অনুগামী হইলেন। উদয়পুরে পৌঁছিয়াই রত্ন নিজের ভুল বুঝিলেন কিন্তু তখন ফিরিবার সময় নাই। নরেন্দ্রমাণিক্য সুযোগ বুঝিয়া সকলকে সৈন্য দিয়া ঘেরাও করিলেন এবং একে একে তাঁহাদিগকে বন্দীশালায় পাঠাইয়া দিলেন। সেখানে মন্ত্রীবর্গের প্রাণ সংহারে অধিক বিলম্ব হইল না। এইরূপে কৌশলে পলায়মান শক্রকে ধ্বংসের মুখে ঠেলিয়া দিয়া দেওয়ান চম্পক রায়কে ধরিবার জন্য ফাঁদ পাতিতে লাগিলেন।

 চম্পক রায় চট্টগ্রামে আশ্রয় লইয়াছিলেন। সেখানে ধৃত হইবার উপক্রম হওয়ায় তিনি ভুলুয়া চলিয়া আসেন, সেখানেও যখন তিষ্ঠান দায় হইল তখন চম্পকরায় উপায়ান্তর না দেখিয়া ঢাকার নবাবের আশ্রয় ভিক্ষা করেন। মহারাজ রত্নের কনিষ্ঠ ভ্রাতা দুর্য্যোধন তথায় চম্পকের সহিত মিলিত হন, নবাব সেনাপতি আমির খাঁ ইঁহাদের পক্ষ লইলেন। এই তিনজনে মিলিয়া রত্নমাণিক্যকে পুনঃ সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য