পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৮৬
 

মুকুন্দমাণিক্য ও
ইন্দ্রমাণিক্য

পার্ব্বত্য অংশে স্মরণাতীতকাল হইতে যে স্বাধীনতা বিরাজ করিতেছিল তাহার বিলোপ ঘটিতে বসিল। নবাব সৈন্যের সহিত পাঁচকড়ি আসায় জয়মাণিক্যের পরাজয়ে বিলম্ব ঘটিল না।

 জয়মাণিক্য স্বীয় পাত্র মিত্র মন্ত্রী লইয়া উদয়পুরের দক্ষিণে সরিয়া গেলেন এবং মতাই নামক স্থানে রাজপাট স্থাপন করিলেন; তথা হইতে পার্ব্বত্য দক্ষিণাংশ শাসন করিতে লাগিলেন। এদিকে ১৭৩৯ খৃষ্টাব্দে (১১৪৯ ত্রিপুরাব্দে) পাঁচকড়ি ইন্দ্রমাণিক্য নামে ঘোষিত হইয়া সিংহাসনে বসিলেন। অনুজ কৃষ্ণমণি যুবরাজ এবং গঙ্গাধর বড় ঠাকুর হইলেন। উদয়পুরের বিরোধী জয়মাণিক্যের শাসনে পার্ব্বত্য ত্রিপুরা দ্বিখণ্ডিত হইয়া পড়িল, ফলে উভয়ের মধ্যে প্রবল রেষারেষির সৃষ্টি হইল। যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হইয়া দাঁড়াইল, মেহেরকুলের জমিদার হরিনারারণ চৌধুরী প্রভৃতি কয়েকজন জয়মাণিক্যের পক্ষভুক্ত হইলেন কিন্তু নূরনগরের তালুকদারগণ ইন্দ্রমাণিক্যের পক্ষাবলম্বন করিলেন।

 তৎকালীন ঘটনা ষড়যন্ত্র হেতু জটিল, কাযেই সুখপাঠ্য নহে। ইন্দ্রমাণিক্যের পরাভব ঘটিল, যুবরাজ কৃষ্ণমণি প্রথমে কৈলাসহর পরে হেড়ম্বরাজ্যে চলিয়া যান। ইন্দ্রমাণিক্য প্রথম বয়স নবাব দরবারে কাটাইয়াছিলেন পুনঃ নবাব সান্নিধ্যে এ সময়ে মুর্শিদাবাদে চলিয়া আসিলেন। ভাগ্যবিপর্য্যয়ের লাঞ্ছনার মধ্যে তথায় গঙ্গাস্নান করিয়া পরম তৃপ্তি পাইতেন। ঢাকার নায়েব নাজিমের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিয়া জয়মাণিক্য যখন