পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২২৩
কৃষ্ণকিশোরমাণিক্য

কৃষ্ণকিশোরমাণিক্যের রাজত্ব কালের প্রসিদ্ধ ঘটনা বর্ত্তমান আগরতলার স্থান নির্ব্বাচন এবং নগর নির্ম্মাণ পূর্ব্বক সেখানে রাজপাট স্থাপন।

 মহারাজ কৃষ্ণকিশোরমাণিক্যের সিংহাসন আরোহণের সঙ্গে সঙ্গেই তদীয় জ্যেষ্ঠপুত্র ঈশানচন্দ্র আড়াই বৎসর বয়ঃক্রম কালে যৌবরাজ্য প্রাপ্ত হন। মহারাণী সুদক্ষিণার গর্ভে যুবরাজ ঈশানচন্দ্র, উপেন্দ্রচন্দ্র ও বীরচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। এতদ্ব্যতীত নীলকৃষ্ণ, চক্রধ্বজ (কালা রাজা), মাধবচন্দ্র, যাদবচন্দ্র, সুরেশকৃষ্ণ ও শিবচন্দ্র নামে মহারাজের আরও ছয় পুত্র হয়। দ্বিতীয় পুত্র উপেন্দ্রচন্দ্রকে তিনি বড়ঠাকুর পদে নিযুক্ত করেন। ১৮৫০ খৃষ্টাব্দে (১২৫৯ সন) মহারাজ কৃষ্ণকিশোরমাণিক্যের বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়।

 মহারাজ কৃষ্ণকিশোরমাণিক্যের মৃত্যু সম্বন্ধে একটি আখ্যান শুনিতে পাওয়া যায়। জ্যোৎস্না রাত্রিতে মহারাজ প্রাসাদে উপবেশন করিয়া আছেন এমন সময় দ্বারদেশে কাহাদের ছায়া দেখা গেল। মহারাজ ভাবনিমগ্ন ছিলেন, সহসা চক্ষু তুলিয়া দেখিলেন, একি! তাঁহার আসন সম্মুখে দীর্ঘকায় তিন জন জটাজুটধারী সন্ন্যাসী, মহারাজ শিহরিয়া উঠিলেন! সন্ন্যাসীত্রয় যুগপৎ কহিয়া উঠিলেন—“মহারাজ, আমাদের চিনিতে পারেন কি?” মহারাজ ভয়ে বিস্ময়ে অভিভূত হইয় রহিলেন, মুখ হইতে কথা সরিতেছিল না; তাই ত, ইঁহারা কে! একজন অমনি বলিলেন—“মহারাজ, রাজভোগে একেবারে চূর হইয়া আছেন