পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৩০
ঈশানচন্দ্রমাণিক্য

ইহাতে তিলমাত্র সন্দেহ নাই। যাহাতে রাজত্ব সুপরিচালিত হয় ইহাতে বিন্দু পরিমাণেও তাঁহার যত্নের ক্রটি ছিল না। চাণক্যের ন্যায় কঠোর শাসনে অচিরে রাজ্যমধ্যে জড়তা দূর হইল এবং আয় বাড়িয়া চলিল। যেমন রাজত্বের আয় বাড়িল তেমনি ব্যয় কমাইয়া দিলেন, ইহাতে রাজভাণ্ডারে বেশ সঞ্চয় হইতে লাগিল এবং সঞ্চিত অর্থে ঋণ শোধ হওয়ায় চাপ কমিয়া আসিতে লাগিল।

 ইতিমধ্যে সিপাহী বিদ্রোহের তুমুল বিপ্লব ঝটিকার ন্যায় দিকে দিকে ছড়াইয়া পড়িল। চট্টগ্রামের বিদ্রোহী সৈন্যবাহিনী ত্রিপুরা রাজ্যের অভিমুখে আসিতেছে জানিয়া মহারাজ ঈশানচন্দ্র তৎক্ষণাৎ ইহাদের গতিরোধ করিবার জন্য স্ব-সৈন্য পাঠাইয়া দেন। সিপাহীরা মহারাজের নিকট হইতে আশ্রয় পাওয়ার পরিবর্ত্তে বাঁধাপ্রাপ্ত হইয়া কাছাড় অভিমুখে প্রস্থান করে। যাহারা ত্রিপুরা রাজ্যে আশ্রয় লইয়াছিল তাহাদিগকে তিনি ব্রিটিশ কর্ত্তৃপক্ষের হস্তে সমর্পণ করেন। এইভাবে এক ভীষণ বিপদের মধ্য হইতে ত্রিপুরা রাজ্যকে স্বীয় প্রতিভাবলে রক্ষা করেন। মহারাজের শক্রস্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁহার ও রাজত্বের ঘোর অনিষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে তিনি যে সিপাহীদের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিয়াছিলেন ইহা প্রমাণ করিতে চেষ্টা পাইয়াছিল কিন্তু ব্রিটিশ বিচারের সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে সে সকল দুরভিসন্ধি প্রকাশ পাইয়া যায় এবং ত্রিপুরেশ্বরের গুণে ত্রিপুরা রাজ্য অক্ষতভাবে সে অগ্নিপরীক্ষায় টিকিয়া উঠে।