পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৪২
প্রতিভাবান্ বীরচন্দ্র

জীবন স্মৃতিতে লিখিয়াছেন—

 ‘মনে আছে এই লেখা বাহির হইবার কিছুকাল পরে কলিকাতায় ত্রিপুরার স্বর্গীয় মহারাজ বীরচন্দ্রমাণিক্যের মন্ত্রী আমার সহিত দেখা করিতে আসেন। কাব্যটি মহারাজের ভাল লাগিয়াছে এবং কবির সাহিত্যসাধনার সফলতা সম্বন্ধে তিনি উচ্চ আশা পোষণ করেন, কেবল এইটি জানাইবার জন্যই তিনি তাঁহার অমাত্যকে পাঠাইয়া দিয়াছিলেন।’[১]

 “মহারাজ বীরচন্দ্রমাণিক্য বাহাদুরের আকৃতি নাতিদীর্ঘ নাতি খর্ব্ব, বর্ণ বিশুদ্ধ গৌর, তিনি সর্ব্বাঙ্গসুন্দর, মুখশ্রী অনেকটা বাঙ্গালীর ন্যায়, চক্ষু সুন্দর, নাসিকা উন্নত।

 “মহারাজ বাঙ্গালা ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপন্ন, তিনি একজন সুকবি। তৎপ্রণীত দুইখানা কবিতাপুস্তক আমরা দর্শন করিয়াছি। উভয়গ্রন্থই গীতিকাব্য। তাঁহার গীতির অনেকগুলি ‘বর্জ্জি’ বুলিতে রচিত, সেগুলি বিদ্যাপতি, গোবিন্দ দাস প্রভৃতি বৈষ্ণব কবিগণের অনুকরণে লিখিত; অনুকরণ হইলেও তাহাদের ভাব সরল, মধুর ও মর্ম্মস্পর্শী। তাঁহার সমস্ত গীতি কবিতাই প্রেমের কাকলিপূর্ণ ও মধ্যে মধ্যে দর্শনাত্মক ভাবের ছায়াপাতে সমুজ্জ্বল হইয়াছে। দুঃখের বিষয় এই যে এই সকল সুন্দর কবিতাকুসুমের সৌরভ আগরতলার গণ্ডি অতিক্রম করিয়া কদাচিৎ কাহাকেও আকুলিত করিয়া থাকে। সেগুলি প্রকাশ করিতে মহারাজ অনিচ্ছুক। কিন্তু প্রকাশিত

  1. কর্ণেল মহিমচন্দ্র ঠাকুর প্রণীত—দেশীয় রাজ্য।