পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৪৬
রাজর্ষি রাধাকিশোর

দিনের সঞ্চিত অভিলাষ কার্য্যে পরিণত করিতে শক্তি সঞ্চয় করিতে লাগিলেন। যুবরাজী আমলে নানা কারণ বশতঃ নিজ রাজধানীর বাহিরের কাহাকেও ঘনিষ্ঠ ভাবে চিনিবার সুযোগ পান নাই। বন্ধুবল বলিতে তাঁহার কিছুই ছিলনা। তিনি বলিতেন, অর্থবল কিম্বা যে কোন প্রকারের বলই বলনা, বন্ধুবল সকলের অপেক্ষা মূল্যবান্। তিনি প্রথমে রবিবাবুকে কাছে টানিয়া লইলেন। রবিবাবু সেইবার প্রথম আগরতলা রাজধানীতে আসিলেন, তখন বসন্তকাল, রাজধানীর উত্তর ভাগে পাহাড়ের উপব কুঞ্জবনে বসন্তোৎসবে কবি-সম্মেলনের ঘটা, কবি রবীন্দ্রনাথের যুগপৎ আনন্দ ও বিস্ময় উৎপাদন করিল। মহারাজ রাধাকিশোরের চরিত্রের মহানুভবতা দেখিয়া কবি পরমানন্দ লাভ করিলেন।

 “ক্রমে ক্রমে রবিবাবর যোগে স্যার আশুতোষ চৌধুরী, স্যার জগদীশ বসু, মহারাজ স্যার যতীন্দ্রনাথ, নাটোরের মহারাজ, জগদীন্দ্রনাথ প্রভৃতি বঙ্গের খ্যাতনামা মহাপুরুষেরা রাধাকিশোরের বন্ধুতার জালে আসিয়া ধরা দিলেন। একে অন্যের সহযোগে দেখিতে দেখিতে স্যার সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন (Lord Sinha) স্যার রাজেন্দ্রলাল, স্যার টি. এন. পালিত, স্যার রাস বিহারী ঘোষ, দ্বারকানাথ চক্রবর্ত্তী প্রভৃতি মহারাজের গুণাকৃষ্ট হইয়া বন্ধুবল বৃদ্ধি করিলেন। এ বন্ধুবলের দ্বারা যেমন রাজনৈতিক অনেক সমস্যার সমাধান করিলেন, অপরদিকে ত্রিপুরার রাজা বঙ্গ-হৃদয় জয় করিলেন।