পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৫৩
রাজর্ষি রাধাকিশোর

অত্যন্ত কৃতজ্ঞতা বোধ করিতেছেন। মাঝ হইতে মহারাজের কল্যাণে যশের কিয়দংশ আমার কপালেও পড়িয়াছে।’

 “তারপর হেমবাবু সম্বন্ধে এরূপ বন্দোবস্ত হইবার দরুণ তিনি স্বচ্ছন্দে গ্রাসাচ্ছাদন পাইয়াছিলেন এবং কতকটা আরামে শেষ জীবন অতিবাহিত করিয়াছিলেন, সে দৃশ্য আমি স্বচক্ষে দেখিয়াছি। যখন আমি সে সংবাদ মহারাজের নিকট পেশ করি তখন মহারাজ কাঁদ কাঁদ স্বরে বলিয়াছিলেন—

 আমি বাঙ্গালার ক্ষুদ্র রাজা হইলেও, আমি বর্ত্তমানে তাঁহাকে যদি কবি মাইকেল মধুসূদনের মত দাতব্য চিকিৎসালয়ে পড়িয়া মৃত্যুকে আলিঙ্গন করিতে হয়, তবে দেশের পরম দুর্ভাগ্য। তোমরা আমার পারিষদেরা নিশ্চয় নিরয়গামী হইবে, আর আমাকে যে কত দূর যাইতে হইবে তাহা জানিনা। তোমাদের চক্ষু কর্ণ যেন এইরূপ ব্যাপারে বন্ধ না থাকে এবং মুখ যেন সদা সর্ব্বদা খোলা থাকে।”[১]

 রাজাদিগের অনুচরেরা রাজার চক্ষু স্বরূপ হওয়ায় তাঁহারা ‘চারচক্ষু’ আখ্যা লাভ করেন। কর্ণেল মহিমচন্দ্র যে মহারাজ রাধাকিশোরের চক্ষুষ্মান্ অনুচর ছিলেন ইহাতে তিলমাত্র সন্দেহ নাই। কেবল যে তাঁহার দেখিবার মত চক্ষু ছিল তাহা নহে লিখিবার মত মনও ছিল। তাই মহারাজের সহিত বিশ্ববিখ্যাত পুরুষদ্বয়ের পরিচয় প্রসঙ্গ এরূপ নিখুঁত ভাবে পরবর্ত্তী যুগের জন্য রাখিয়া যাইতে


  1. কর্ণেল মহিম ঠাকুর প্রণীত—‘দেশীয় রাজ্য’।