পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৫৫
বীরেন্দ্রকিশোর

বীরেন্দ্রকিশোরের চিত্র প্রতিভার সর্ব্বোত্তম দান হইতেছে ‘কুঞ্জবন’ নির্ম্মাণ। যাঁহারা আকবরের ‘ফতেপুর শিক্রী’ দেখিয়াছেন তাঁহারাই বুঝিতে পারিবেন স্থান নির্ব্বাচনের তুলনায় ‘ফতেপুর শিক্রী’ হইতে কুঞ্জবন কোনও অংশে ন্যূন নহে। ফতেপুর শিক্রীর উচ্চতা অধিক নহে, কুঞ্জবনও তদনুরূপ, শিক্রীর চতুষ্পার্শ্বে প্রকৃতির সৌন্দর্য্যে নুতনত্ব কিছুই নাই, শিক্রী নিজের সৌন্দর্য্যেই নিজে উদ্ভাসিত কিন্তু কুঞ্জবন তাহা নহে। কুঞ্জবনের মধ্যে এমন একটি লুক্কায়িত মহিমা আছে যাহা শিল্পী বীরেন্দ্রকিশোরের দৃষ্টি এড়াইতে পারে নাই। তিনি সেই মহিমার প্রতি লক্ষ্য রাখিয়াই কুঞ্জবনের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। সেই মহিমাটি কি?

 আগরতলা সম্বন্ধে বাহিরের লোকের ধারণা আছে যে ইহা পার্ব্বত্যস্থান কিন্তু সহরে প্রবেশ অবধি ভিতরে আসিয়াও পর্ব্বতের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায় না। মনে হয় কি ভুল ধারণা! এখানে ত মোটেই পাহাড় নাই, একেবারে গ্রামদেশেরই মত বেশ সমতল। কুঞ্জবনের পথে অগ্রসর হইতে হইতেও এ ভুল ভাঙ্গে না। যখন পথিক কুঞ্জবন প্রাসাদ শিখরে উঠিয়া সহরের দিকে মুখ করিয়া তাকায় তখন অবাক্ হইয়া দেখিতে পায় দক্ষিণের পর্ব্বতমালা উত্তরের শৈলশ্রেণীর সহিত মিশিয়া গিয়া এক হইয়া গিয়াছে এবং কয়েক মুহূর্ত্ত পূর্ব্বেও যে সহরকে সমতল মনে করা গিয়াছিল তাহা যেন কোন্ যাদুমন্ত্রে বনের মধ্যে অস্তিত্ব হারাইয়া ফেলিয়াছে। উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের চূড়া