পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৬৯
বীরবিক্রমকিশোর

রাজকুলকে শুভ শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত করে তুলেছে। এ বংশের সকলের চেয়ে বড় গৌরব আজ পূর্ণ বিকশিত হয়ে উঠলো এবং এইদিনে রাজহস্ত থেকে আমি যে পদবী ও অর্ঘ্য পেলেম তা সগৌরবে গ্রহণ করি এবং আশীর্ব্বাদ করি এই মহাপুণ্যের ফল মহারাজের জীবনযাত্রার পথকে উত্তরোত্তর নবতর কল্যাণের দিকে যেন অগ্রসর করতে থাকে। আজ আমার দেহ দুর্ব্বল, আমার ক্ষীণকণ্ঠ সমস্ত দেশের সঙ্গে যোগ দিয়ে তাঁর জয়ধ্বনিতে কবি জীবনের অন্তিম শুভ কামনা মিশ্রিত করে দিয়ে মহা নৈঃশব্দের মধ্যে শান্তি লাভ করুক।”

 মহারাজ বীর বিক্রমকিশোরের হৃদয় স্পন্দনে সমগ্র প্রাচীন ইতিহাস জীবন্ত হইয়া রহিয়াছে। অতীতের ঐতিহাসিক ঘটনাস্রোত তাঁহাকে ঘিরিয়া ভারত ইতিহাসের ভাঙ্গাগড়ার মধ্যে এক অব্যাহত রাজবংশের মহিমা কীর্ত্তন করিতেছে।

 রাজবংশের কুলাচরিত প্রথা অনুযায়ী উত্তরাধিকারী নির্ণয়, মহারাজ বীর বিক্রম করিয়াছিলেন ১৩৫০ ত্রিপুরাব্দের ২৬শে অগ্রহায়ণ তারিখে। মহারাজকুমার কিরীট বিক্রমকিশোরকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করিয়া যে দরবারের অনুষ্ঠান হয়, তাহাতে নানা রাজ্যের রাজন্যবর্গ ও প্রতিনিধিবর্গ যোগদান করিয়া সৌষ্ঠব বৃদ্ধি করিয়াছিলেন। এই উপলক্ষে প্রকৃতিপুঞ্জের দেয় ছয়লক্ষ টাকা পরিমাণ খাজানা এবং মুসলমান প্রজাবৃন্দের বিবাহকালীন দেয় “কাজিয়ানা” মাপ করিয়া মহারাজ অভিষেক আনন্দকে স্মরণীয় করিয়া গিয়াছেন।