পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৭০
বীরবিক্রমকিশোর

 যে অন্তর্দৃষ্টি লইয়া প্রজাসাধারণের দাবীর পূর্ব্বেই এই সমস্ত বিষয় সমাধান করিয়াছেন, তাহাতে বীরবিক্রমকিশোরের ভারতীয় জন-জাগরণের স্বরূপ সম্বন্ধে তখনই উপলব্ধি হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়। বিশেষতঃ রাজ্যের শাসন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে ক্রমশঃ আনয়ন কল্পে যে শাসনতন্ত্রের পরিকল্পনা ঘোষণা করিয়াছিলেন তাহা পূর্ণ দায়িত্বশীল না হইলেও, প্রজাসাধারণকে রাজ্যশাসনের গুরু দায়িত্বভার গ্রহণ করিতে পূর্ণ পথ প্রদর্শক হইয়াছিল।

 এই শাসনতন্ত্রের মূলকথা হইয়াছিল—ত্রিপুরেশ্বরের অধিকার ও ক্ষমতা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সাহায্যকারী “রাজসভা” বা প্রিভি-কাউন্সিল; এবং রাজ্যের শাসন কর্ত্তৃত্ব “মন্ত্রী-পরিষদ” বা মন্ত্রীসভার প্রতি ন্যস্ত। আইন প্রণয়নের নিমিত্ত সরকারী ও বেসরকারী নির্ব্বাচিত সদস্যগণ গঠিত “ব্যবস্থাপক সভা”। রাজ্যের গ্রামবাসিগণ যাহাতে গ্রাম্য স্বায়ত্ত্বশাসন পরিচালনা করিতে সক্ষম হয়—তজ্জন্য “গ্রাম্যমণ্ডলী” আইন প্রবর্ত্তিত হয়।

 এই শাসনতন্ত্র ঘোষণায় মহারাজ ১৩৪৯ ত্রিপুরাব্দের ১লা বৈশাখ বলিয়াছিলেন—“যে হেতু রাজ্যভার গ্রহণাবধি এপক্ষ শিক্ষা ও গঠনমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্ত্তন দ্বারা পুত্রতুল্য প্রজাবৃন্দের সর্ব্বাঙ্গীন উন্নতি সাধন, এবং স্বাবলম্বন, সহযোগিতা রাষ্ট্রানুরাগ প্রভৃতি আদর্শ নাগরিকের-ধর্ম্মে নিয়ত তাহাদিগকে প্রবুদ্ধ করবার আপ্রাণ চেষ্টা করিয়া আসিতেছেন;—