পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৬
 

ত্রিপুরের মৃত্যু ও চতুর্দ্দশ
দেবতার প্রকাশ

যে পিতৃ-পিতামহের স্মৃতি লোপ করিয়া নিজের নামে জাতীয় পরিচয় দেন এবং দেশের নামের স্মৃতি লোপ করিয়া তাহার উপরও নিজের নামের ছাপ বসাইয়া দেন।

 শিবের ত্রিশূলাঘাতে ত্রিপুরের মৃত্যু হইল বটে, কিন্তু প্রজাগণের দুঃখ দূর হইল না। রাজ্য অরাজক হইল, দৈব কোপে রাজ্যে নানা অশান্তি ঘটিতে লাগিল। অন্নাভাবে বস্ত্রাভাবে প্রজার দুঃখের সীমা রহিল না। প্রজাগণ নিকটস্থ হেড়ম্বরাজ্যে ভিক্ষা করিয়া আহার যোগাইতে লাগিল। কখনও বা হেড়ম্ববাসীরা দূর দূর করিয়া তাড়াইয়া দিত, ভিক্ষা করিতে যাইবার কালে বস্ত্রের অভাবে তাহারা কখনও বা গাছের ছাল পরিত। এইরূপ অরাজকরাজ্যে বহু দুঃখে কাল কাটাইয়া প্রজারা ঠিক করিল পশুপতির আরাধনা করিবে। কিরাত ভাবে তাহারা পূজা আরম্ভ করিল এবং সাতদিন সাতরাত শিবের নামে বাদ্যগীতে বিভোর হইয়া রহিল। শিবের দয়া হইল। বাঘছাল পরণে, গলে ফণিহার, ললাটে অর্দ্ধচন্দ্র, হস্তে শিঙ্গা ডম্বরু, নন্দী ভৃঙ্গী সঙ্গে দেবদেব মহাদেব আবির্ভূত হইলেন। প্রজাগণ মাটিতে লুটাইয়া কহিতে লাগিল, ‘প্রভো, ত্রিপুরের পাপে আমরা কত না কষ্ট পাইতেছি; অবোধ সন্তানদের ক্ষমা কর। ত্রিপুরকে মারিয়া রাজপাট শূন্য করিয়াছ। অরাজক রাজ্যে বাস করা যায় না। আমাদিগকে রাজা দাও।

 শিব প্রসন্ন হইলেন। আদেশ হইল—ত্রিপুরের রাণী হীরাবতী শিব-প্রসাদে পুত্রবতী হইবেন, শিবের বরে