পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৪৯

মঘরাজ ও রাঙ্গামাটি
জয়

পারিল না। ত্রিপুর সৈন্যের হুঙ্কারে তুষের ন্যায় মঘ সৈন্য ছিন্নভিন্ন হইয়া গেল, মঘরাজ যুদ্ধে হারিয়া গেলেন।

 তখন কিরাত জয় করিয়া যেমন তাঁহার পূর্ব্বপুরুষ ত্রিবেণীতে রাজপাট স্থাপন করেন তেমনি যুঝা মঘদেশ জয় করিয়া রাঙ্গামাটিতে স্বীয় রাজপাঠ প্রতিষ্ঠিত করেন, এই সময় হইতেই উদয়পুর অঞ্চলে রাজধানী স্থাপিত হয়, পরে উদয় মাণিক্য ইহার নামকরণ করেন।

 রাঙ্গামাটিতে ত্রিপুররাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হইয়া কালক্রমে সুদূর ব্রহ্মদেশ পর্য্যন্ত বিস্তৃত হইয়াছিল। মঘদের সহিত রাজা প্রজা সম্বন্ধ হওয়ায় ত্রিপুরনৃপতি মঘদিগকে কৌশলে প্রীত রাখিবার জন্য নিজ নামের সহিত ফা উপাধি জুড়িয়া দিলেন এবং নিজ নামেরও মঘ সংস্করণ প্রচার করিলেন। সেই হইতে ত্রিপুর ইতিহাসে দ্রুহ্যু বংশীয়ের অসংস্কৃত নামের ধারা দেখিতে পাওয়া যায়। ফা অর্থে পিতা।[১] বর্ত্তমান সুপ্রসিদ্ধ চন্দ্রনাথ তীর্থের সহিত ত্রিপুররাজগণের বংশপরম্পরা সম্বন্ধ দ্বারা

  1. ফা শব্দ অনার্য্য ভাষা সমুদ্ভূত বলিয়া কথিত হয়। কেহ কেহ বলেন—শ্যানদেশীয় ও ব্রহ্মদেশীয় নরপতিগণ “ফ্রা” উপাধিধারণ করিতেন। ফ্রা হইতে ফার উদ্ভব। ফ্রা প্রভুত্ববাচক, ফা অর্থে পিতা। আসামের অজহাম নৃপতিগণও ফা উপাধি ধারণ করিতেন। কিন্তু ত্রৈপুর রাজবংশীয়গণ তৎপূর্ব্ব হইতেই এই উপাধি ধারণ করিয়া আসিতেছেন।
    —শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত।