পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৭০
ধন্যমাণিক্যের শাপমোচন

এই বলিয়া শালগ্রাম শিল। ছুঁইয়া সত্য করিলে ধাত্রী কুমারের সন্ধান বলিয়া দিল। তখন দশ সেনাপতি হাতী ঘোড়ায় মিছিল সাজাইয়া পুরোহিতের বাটীর প্রাঙ্গণে আসিয়া উপস্থিত। ধন্য এসব সোরগোল শুনিয়া ভয়ে মাচার নীচে যাইয়া লুকাইলেন। পুরোহিত ধাত্রীর নিকট হইতে এসংবাদ পূর্ব্বেই পাইয়া ছিলেন কাযেই তাঁহার সন্দেহ হইল না। তিনি ঘরে আসিয়া দেখেন ধন্য মাচার নীচে ভয়ে জড়সড়। পুরোহিতকে দেখিয়া বলিলেন—“দোহাই ঠাকুর, আমি সেবক হইয়া উচ্ছিষ্ট ফেলিয়। একমুষ্টি অন্ন তোমার ঘরে পাইয়া থাকি, আমাকে দূর করিয়া দিও না।” পুরোহিত অনেক বুঝাইলেন—“বাবা, কোন ভয় নাই, তুমি শাপভ্রষ্ট দেবকুমার, তোমার দুঃখের দিন কাটিয়া গিয়াছে রাজমুকুট পরাইবার জন্য তোমাকে বরণ করিতে আসিয়াছে।” পুরোহিতের অভয় বাক্যে কুমারের প্রত্যয় হইল। তখন কুমার বাহিরে আসিলেন। শুক্রাচার্য্যের কৃপায় যেমন দৈত্যরাজ বলির ইন্দ্রত্ব লাভ ঘটে, পুরোহিতের কৃপায়ও তেমনি ধন্যের রাজ্য লাভ হইতে চলিল। সেনাপতিগণ কুমারকে দেখিবা মাত্র তাঁহার পায়ে লুটাইয়া পড়িল এবং গলবস্ত্র হইয়া কুমারের নিকট অপরাধ স্বীকার করিল। কুমার তখন হাতীর উপর জরির হাওদায় বসিয়া রাজা হইতে চলিলেন। পুরোহিতের বাক্য যথার্থ—এতদিনে তাঁহার শাপ মোচন হইল।

 ধাত্রীর কথা পড়িবার সঙ্গেই রাজপুত ইতিহাসে ধাত্রী পান্নার কথা স্মরণ হয়—শোণিত-পিপাসু বনবীরের হাত হইতে