মাধব তবুও কোন কথা বলে না। সর্দ্দার যেন একটু দমিয়া গেল। সে ঘন ঘন গাঁজায় দম দিতে দিতে তাহার সঙ্গীর সহিত কুৎসিত বাক্যালাপে রত হইল।
পরিশেষে মাধব তাহার নীরবতা ভঙ্গ করিয়া প্রশ্ন করিল, তোমার মনিব আমাকে নিয়ে কি করতে চায়, বলতে পার? আমাদের কোনও মনিব নাই, গজ গজ করিতে করিতে এই কথা বলিয়া সর্দ্দার আবার গাঁজা ও অশ্লীল কথাবার্ত্তায় রত হইল।
মাধব আবার বলিল, মনিব না হোক এ কাজে তোমাদের যে ভাড়া করেছে সে—
পূর্ব্ববৎ কঠোর স্বরে সর্দ্দার জবাব দিল, ভাড়া আমাদের কেউ করে নি —সে গাঁজা টানিয়াই চলিল।
—এ কাজ যার হুকুমে তোমরা করেছ—মাধব বলিল।
—কারো হুকুমে নয়। —সর্দ্দার জবাব দিল।
—কেউ নয়? তবে কি আমাকে নিয়ে খেলা করবার জন্যে ধ’রে এনেছ?
সর্দ্দার তৎক্ষণাৎ উত্তর করিল, খেলা নয়। আমাদের টাকার দরকার, টাকা চাই।
গর্ব্বিত সর্দ্দারের বিশ্বাস ছিল যে, সে ধনী এবং প্রতিপত্তিশালী লোকদের আতঙ্কস্বরূপ, তাহাদের প্রতিপত্তি নষ্ট করাই তাহার কাজ; মাধবের শান্ত সংযত ব্যবহার ও উদ্ধত ভাষা তাহার সেই গর্ব্বে আঘাত করিল। সেও মাধবকে উত্তর-প্রত্যুত্তরে আঘাত দিতে কৃতসঙ্কল্প হইল।
মাধব প্রশ্ন করিল, টাকা তোমাদের দেবে কে?
সর্দ্দার বলিল, ভেবে দেখ |
—সে ভাবনা আমার নয়।