নবম পরিচ্ছেদ
মিলনে বিরহের সূচনা
মাধব তাহার পত্নী ও শ্যালিকার সহিত মিলিত হইয়াই মাতঙ্গিনীকে লক্ষ্য করিয়া বলিল, তুমি আমার জন্যে যা করেছ, তা কি আমি ভুলতে পারি?
হেমাঙ্গিনীর বুক হইতে আশঙ্কার গুরুভার তখন নামিয়া গিয়াছে, সে দিদিকে মাধবের নিকট একা রাখিয়া লঘুপদক্ষেপে ঘরের বাহিরে চলিয়া গেল। মাধব আবার বলিল, তুমি যা করেছ, তা ভোলবার নয়। কথা দিয়া সে যাহা প্রকাশ করিতে পারিতেছিল না, তাহার দৃষ্টিতে সেই কৃতজ্ঞতা ছিল।
—বেশ, ভুলতে যদি না পার, হেমের জন্যে মনে ক’রে রেখ। ঈশ্বর না করুন, যদি কখনও তার ওপর তোমার রাগ হয়, তার দিদির আজকের এই যন্ত্রণা-ভোগের কথা মনে ক’রে তাকে ক্ষমা ক’রো। আমার কথা যদি বল, এ আমাকে করতেই হত। যাক, আমি তা হ’লে আসি।
মাধব বলিল, সে কি দিদি, কতদিন হেম তোমাকে দেখে নি, আরও ঘণ্টা কয়েক সে তোমার সঙ্গে থাকতে পেলে খুসি হবে। যদি দু-একদিন না থাকতে চাও, সকাল হ’লেই আমার পাল্কীতে বাড়ি যেও এখন। এই রাত্রেই হেঁটে বাড়ি যাবার দরকার কি?
মাতঙ্গিনী বিষন্ন ভাবে বলিল, অদৃষ্টের লিখন। সে সুখ আমার কপালে নেই ভাই। আমাকে যেতেই হবে।
মাধব আবার প্রশ্ন করিল, ব্যাপার কি দিদি? আমার জানতে কিছু বাধা আছে?