—আর তুমি নিশ্চিন্ত হয়ে তোমার পরিবারকে নিকেশ কর। দুঃসাহসী আগন্তুকের মুখ একটা পৈশাচিক হাসিতে উদ্ভাসিত হইল। রাজমোহন উন্মাদের মত গর্জ্জন করিয়া উঠিল, আমার যা খুশি করব, আমাকে ঠেকাবে কে শুনি!এবং পরক্ষণেই সে ছুটিয়া গিয়া আগন্তুকের বুকে ছুরি বসাইতে উদ্যত হইল। আগন্তুক বিদ্যুৎগতিতে সরিয়া গিয়া সে আঘাত হইতে আত্মরক্ষা করিল এবং নিজের বিশাল তরবারির এক আঘাতে রাজমোহনের হাতের ক্ষুদ্র অস্ত্র দশ হাত দূরে নিক্ষেপ করিল। নিমেষ ফেলিতে না ফেলিতে সে সজোরে লৌহমুষ্টিতে রাজমোহনের হাত চাপিয়া ধরিল। এতক্ষণ-পর্য্যন্ত-নীরব সঙ্গীটিকে লক্ষ্য করিয়া সে বলিল, ভিখু, আলোটা এদিকে ধর্ তো, আমার মুখটা ওকে দেখতে দে। বাপ রাজু, এ চাঁদ-মুখ বাবা, তোমার চন্দ্রবদনী স্ত্রী এ মুখ দেখলে খুশিই হবে। ভিখু প্রদীপ আনিয়া তাহার সঙ্গীর মুখের কাছে ধরিল!
রাজমোহন বিস্ময়ে চীৎকার করিয়া উঠিল, সর্দ্দার! আগন্তুক জবাব দিল, আজ্ঞে হ্যাঁ, সর্দ্দার! যা হোক তবু চিনতে পারলে দেখছি! বন্ধুরা এত সহজে কি বন্ধুদের ভোলে?
রাজমোহনের রাগ কিন্তু ইহাতে প্রশমিত হইল না, সমান ক্রুদ্ধকণ্ঠে সে বলিল, তোমরা এখানে কেন? আমার বাড়িতে চড়াও হবার মানে কি?
—আগে বল, তোমার বউকে খুন করতে যাচ্ছিলে কেন।
—সে খোঁজে তোমার প্রয়োজন? দেখ, ভালয় ভালয় বলছি কেটে পড়, সর্দ্দার-টর্দ্দার আমি মানি না, না গেলে লাথি মেরে বের করব |
সর্দ্দার ঠাট্টা করিয়া বলিল, বটে! কুলুপ-কলে তো প’ড়ে আছ, লাথি মারবে কে শুনি?
আমার পা এখনও স্বাধীন আছে —বজ্রনির্ঘোষে এই কথা বলিয়া