রাজমোহনের স্ত্রী br。 তারা বাধা দিয়া বলিল, ছিঃ ! নষ্ট মেয়ে যদি সুন্দরী হয়, তবে সৌন্দৰ্য্যকে কি কেউ অবজ্ঞা করে নাকি ! তুমি যা বলছ বোন, সেদিক দিয়ে হিসেব করলে, তোমার আমন সুন্দর মুখকেও কুশ্রী করে রাখা উচিত। না বাপু, নষ্ট মেয়েদের একমাথা চুল আছে বলে গেরস্থের মেয়ের তা থাকবে না, এ কেমনধারা কথা ! যেমন করে খুশি তুমি খোপা বাধ দিদি —মাতঙ্গিনীর উদ্দেশে সে বলিল । চম্পক উত্তর দিল না বটে, কিন্তু তাহার মুথ যে রকম অন্ধকার হইয়৷ উঠিল তাহাতে ইহা স্পষ্ট বোঝা গেল যে, তারার মুখে তাহার প্রশংসাও সে নিজের খেয়ালে যে বাধা পাইয়াছে, তাহার জালা ভূলাইতে পারে নাই । ঠিক এই সময়ে নীচের সিড়িতে ভারী পায়ের শব্দ শোনা গেল এবং মথুর ঘোষ বারান্দায় আসিয়া দাড়াইল । চম্পক চিবুক অবধি ঘোমটা টানিয়া ত্বরিতপদে নিজের ঘরে চলিয়া গেল, দৌড়াইতে গিয়া তাহার পায়ের মল বাজিয়া উঠিল । তারাও অবশ্য মাথায় ঘোমটা টানিল, কিন্তু অতপানি নয়, এবং যাইবার জন্য আস্তে উঠিয়া বসিল । মাতঙ্গিনী সৰ্ব্বাঙ্গ ঢাকিয়া এক পাশে দাড়াইয়া রহিল। মথুর ঘোষ দাড়াইয় মেয়ের সহিত দুই-একটি কথা কহিল । দরজার আড়াল হইতে চম্পক তাহাকে লুকাইয়া লক্ষ্য করিতেছিল—সে সন্দিগ্ধ প্রকৃতির, সুতরাং তাহার নজর এড়াইল না যে, মেয়ের সহিত কথা কঠিতে কহিতে নবাগতার বস্ত্রাচ্ছাদিত মূৰ্ত্তির দিকে ও স্বামীর সতৃষ্ণ দৃষ্টি মাঝে মাঝে পড়িতেছে। মথুর ঘোষ দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর কক্ষাভিমুখে চলিয়া গেলে, মেয়েরা আবার নিজেদের কাজে আসিয়া বসিল । শুধু চম্পক বাদ রহিল । তাহার স্বামী গিয়া তাহাকে ঘরেই পাইল । চম্পক বেশ জানিত যে, তাহার স্বামী তাহার কক্ষেই আসিবেন, তাহার নিজের দেখা করিবার দরকারও ছিল । কিন্তু পাছে কেহ বোঝে যে, তাহার সহিত দেখা করিতেই সে ঘরে আসিয়াছে, তাই স্বামীকে
