পাতা:রাজযোগ.djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ভূমিকা

বিষয়ে পতঞ্জলির সহিত মতভেদ হইলেও, সকলেই অবিপর্য্যয়ে তদীয় সাধনপ্রণালীর অনুমোদন করিয়াছেন। এই পুস্তকের প্রথমাংশে, বর্ত্তমান লেখক নিউইয়র্কে কতকগুলি ছাত্রকে শিক্ষা দিবার জন্য যে সকল বক্তৃতা প্রদান করেন, সেইগুলি দেওয়া গেল। অপরাংশে পতঞ্জলির সূত্রগুলির ভাবানুবাদ ও তাহার সহিত একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হইয়াছে। যতদূর সাধ্য পারিভাষিক শব্দ ব্যবহার না করিবার ও কথোপকথনোপযোগী সহজ ও সরল ভাষায় লিখিবার চেষ্টা করা হইয়াছে। প্রথমাংশে সাধনার্থিগণের জন্য কতকগুলি সরল ও বিশেষ উপদেশ দেওয়া হইয়াছে; কিন্তু তাঁহাদের সকলকেই বিশেষ করিয়া সাবধান করিয়া দেওয়া যাইতেছে যে যোগের কোন কোন সামান্য অঙ্গ ব্যতীত, নিরাপদে যোগশিক্ষা করিতে হইলে, গুরু সর্ব্বদা নিকটে থাকা আবশ্যক। যদি কথাবার্ত্তার ছলে প্রদত্ত এই সকল উপদেশ লোকের অন্তরে এই সম্বন্ধে আরও অধিক জানিবার ইচ্ছা উদ্রেক করিয়া দিতে পারে, তাহা হইলে গুরুর অভাব হইবে না।

পাতঞ্জলদর্শন সাংখ্যমতের উপর স্থাপিত, এই দুই মতে প্রভেদ অতি সামান্য। দুটি প্রধান মতবিভিন্নতা এইঃ প্রথমতঃ,—পতঞ্জলি আদিগুরুস্বরূপ সগুণ ঈশ্বর স্বীকার করেন, কিন্তু সাংখ্যেরা কেবল প্রায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, যাঁহার উপর সাময়িক (কোন কল্পে) জগতের শাসনভার প্রদত্ত হয়, এইরূপ অর্থাৎ জন্য-ঈশ্বর মাত্র স্বীকার করিয়া থাকেন। দ্বিতীয়তঃ, যোগীরা মনকে আত্মা বা পুরুষের ন্যায় সর্ব্বব্যাপী বলিয়া স্বীকার করিয়া থাকেন, সাংখ্যেরা তাহা করেন না।