বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিল্বন। না। সূক্ষ্ম বুদ্ধির একটা লক্ষণ এই যে, তাহা সহজ জিনিসকে শক্ত করিয়া তুলে। পৃথিবীতে বিস্তর বুদ্ধিমান না থাকিলে পৃথিবীর কাজ অনেকটা সোজা হইত। নানারূপ সুবিধা করিতে গিয়াই নানারূপ অসুবিধা ঘটে। অধিক বুদ্ধি লইয়া মানুষ কী করিবে ভাবিয়া পায় না।

রাজা কহিলেন, “পাঁচটা আঙুলেই বেশ কাজ চলিয়া যায় দুর্ভাগ্যক্রমে সাতটা আঙুল পাইলে ইচ্ছা করিয়া কাজ বাড়াইতে হয়।”

রাজা ধ্রুবকে ডাকিলেন। ধ্রুব তাহার সঙ্গিনীর সহিত পুনরায় শান্তি স্থাপন করিয়া খেলা করিতেছিল। রাজার ডাক শুনিয়া তৎক্ষণাৎ খেলা ছাড়িয়া রাজার কাছে আসিয়া উপস্থিত হইল। রাজা তাহাকে সম্মুখে বসাইয়া কহিলেন, “ধ্রুব সেই নূতন গানটিঠাকুরকে শোনাও।” কিন্তু ধ্রুব নিতান্ত আপত্তির ভাবে ঠাকুরের মুখের দিকে চাহিল।

রাজা লোভ দেখাইয়া বলিলেন, “তোমাকে টক্‌টক্‌ চড়তে দেব।”

ধ্রুব তাহার আধো-আধো উচ্চারণে বলিতে লাগিল—

আমায়   ছ-জনায় মিলে পথ দেখায় ব’লে                               
পদে পদে পথ ভুলি হে।
নানা কথার ছলে নানান মুনি বলে,
সংশয়ে তাই দুলি হে।
তোমার কাছে যাব এই ছিল সাধ,
তোমার বাণী শুনে ঘুচাব প্রমাদ, 
কানের কাছে সবাই করিছে বিবাদ
শত লোকের শত বুলি হে।     
কাতর প্রাণে আমি তোমায় যখন যাচি     
আড়াল করে সবাই দাঁড়ায় কাছাকাছি,