নক্ষত্ররায় চুপ করিয়া রহিলেন।
রঘুপতি বলিলেন, “তুমি রঘুপতিকে ডাকিয়াছ। আমি আসিয়াছি।”
নক্ষত্ররায় অস্পষ্টস্বরে কহিলেন, “ঠাকুর– ঠাকুর!”
রঘুপতি কহিলেন, “উঠিয়া এস।”
নক্ষত্ররায় ধীরে ধীরে সভা হইতে উঠিয়া গেলেন। বিড়ালের বিয়ে, সাহানা এবং সারঙ্গ একেবারে বন্ধ হইল।
ষড়্বিংশ পরিচ্ছেদ
রঘুপতি জিজ্ঞাসা করিলেন, “এ-সব কী হইতেছিল?”
নক্ষত্ররায় মাথা চুলকাইয়া কহিলেন, “নাচ হইতেছিল।”
রঘুপতি ঘৃণায় কুঞ্চিত হইয়া কহিলেন, “ছি ছি!”
নক্ষত্র অপরাধীর ন্যায় দাঁড়াইয়া রহিলেন।
রঘুপতি কহিলেন, “কাল এখান হইতে যাত্রা করিতে হইবে। তাহার উদ্যোগ করো।”
নক্ষত্ররায় কহিলেন, “কোথায় যাইতে হইবে?”
রঘুপতি। সে কথা পরে হইবে। আপাতত আমার সঙ্গে বাহির হইয়া পড়ো।
নক্ষত্ররায় কহিলেন, “আমি এখানে বেশ আছি।”
রঘুপতি। বেশ আছি! তুমি রাজবংশে জন্মিয়াছ, তোমার পূর্বপুরুষেরা সকলে রাজত্ব করিয়া আসিয়াছেন। তুমি কিনা আজ এই বনগাঁয়ে শেয়াল রাজা হইয়া বসিয়াছ আর বলিতেছ “বেশ আছি”!
রঘুপতি তীব্র বাক্যে ও তীক্ষ্ণ কটাক্ষে প্রমাণ করিয়া দিলেন যে, নক্ষত্ররায় ভালো নাই। নক্ষত্ররায়ও রঘুপতির মুখের তেজে কতকটা সেইরকমই বুঝিলেন। তিনি বলিলেন, “বেশ আর কী এমনি আছি! কিন্তু আর কী করিব? উপায় কী আছে?”