লইবেন না—অসাবধানে ঘটিয়াছে—অন্য তসবীরের সঙ্গে আসিয়াছে।”
রাজকুমারী বলিলেন, “অত ভয় পাইতেছ কেন? এমন কাহার তসবীর যে দেখাইতে ভয় পাইতেছে?”
বুড়ী! দেখিয়া কাজ নাই। আপনার ঘরের দুষ্মনের ছবি।
রাজকুমারী। কার তসবীর?
বুড়ী। (সভয়ে)। রাণা রাজসিংহের।
রাজকুমারী হাসিয়া বলিলেন, “বীরপুরুষ স্ত্রীজাতির কখনও শত্রু নহে। আমি ও তসবীর লইব।”
তখন বৃদ্ধা রাজসিংহের চিত্র তাঁহর হস্তে দিল। চিত্র হাতে লইয়া রাজকুমারী অনেকক্ষণ ধরিয়া তাহা নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন; দেখিতে দেখিতে তাঁহার মুখ প্রফুল্ল হইল; লোচন বিস্ফারিত হইল। একজন সখী, তাঁহার ভাব দেখিয়া চিত্র দেখিতে চাহিল—রাজকুরামী তাহার হস্তে চিত্র দিয়া বলিলেন, “দেখ। দেখিবার যোগ্য বটে। বীবপুরুষের চেহারা।”
সখীগণের হাতে হাতে সে চিত্র ফিরিতে লাগিল। রাজসিংহ যুবাপুরুষ নহে—তথাপি তাঁহার চিত্র দেখিয়া সকলে প্রশংসা করিতে লাগিল।
বৃদ্ধা সুযোগ পাইয়া এই চিত্রখানিতে দ্বিগুণ মুনাফা করিল। তার পর লোভ পাইয়া বলিল,
“ঠাকুরাণি যদি বীরের তসবীর লইতে হয়, তবে আর একখানি দিতেছি। ইহার মত পৃথিবীতে বীর কে?”
এই বলিয়া বৃদ্ধা আর একখানি চিত্র বাহির করিয়া রাজপুত্ত্রীর হাতে দিলেন।