ধিকা। নির্ম্মল অনেক ভাবিল। শেষে চঞ্চলের প্রতি স্থিরদৃষ্টি করিয়া জিজ্ঞাসা করিল,
“রাজকুমারি—যে বীর তোমাকে এ বিপদ হইতে রক্ষা করিবে, তাহাকে তুমি কি দিবে?”
রাজকুমারী বুঝিলেন। স্থির কাতর অথচ অবিকম্পিত কণ্ঠে বলিলেন,
“কি দিব সখি! আমার কি আর দিবার আছে? আমি যে অবলা!”
নির্ম্মল। তোমার তুমিই আছ?
চঞ্চল অপ্রতিত হইয়া বলিল, “দূর হ!”
নির্ম্মল। তা রাজার ঘরে এমন হইয়া থাকে। তুমি যদি রুক্মিণী হইতে পার, যদুপতি আসিয়া অবশ্য উদ্ধার করিতে পারেন।
চঞ্চলকুমারী মুখাবনত করিল। বলিল, “তাঁহাকে পাইব আমি কি এমন ভাগ্য করিয়াছি? আমি বিকাইতে চাহিলে তিনি কি কিনিবেন?”
নির্ম্মল। “সে কথার বিচারক তিনি—আমরা নই। রাজসিংহের বাহুতে শুনিয়াছি বল আছে; তাঁর কাছে কি দূত পাঠান যায় না। গোপনে—কেহ না জানিতে পারে এরূপ দূত কি তাঁহার কাছে যায় না?”
চঞ্চল ভাবিল। বলিল, “তুমি আমার গুরুদেবকে ডাকিতে পাঠাও। আমায় আর কে তেমন ভালবাসে? কিন্তু তাঁহাকে সকল কথা বুঝাইয়া বলিয়া আমার কাছে আনিও। সকল কথা বলিতে আমার লজ্জা করিবে।”