য়াছে—আমি মোগল সেনাপতি হইয়া কি প্রকারে উহাদের ক্ষমা করি?”
চ। ক্ষমা করিয়া কাজ নাই—যুদ্ধ করুন।
এই সময়ে রাজপুতগণ লইয়া রাজসিংহ সেইখানে উপস্থিত হইলেন—তখন চঞ্চলকুমারী বলিতে লাগিলেন, “যুদ্ধ করুন— রাজপুতের মেয়েরাও মরিতে জানে।”
মোগলসেনাগতির সঙ্গে লজ্জাহীনা চঞ্চল কি কথা কহিতেছে শুনিবার জন্য রাজসিংহ এই সময়ে চঞ্চলের পার্শ্বে আসিয়া দাঁড়াইলেন। চঞ্চল তখন তাঁহার কাছে হাত পাতিয়া হাসিয়া বলিলেন, “মহারাজাধিরাজ! আপনার কোমরে যে তরবারি দুলিতেছে, রাজপ্রসাদ স্বরূপ দাসীকে উহা দিতে আজ্ঞা হউক!”
রাজসিংহ হাসিয়া বলিলেন, “বুঝিয়াছি তুমি সত্য সত্যই ভৈরবী।” এই বলিয়া রাজসিংহ কটি হইতে অসি নির্ম্মুক্ত করিয়া চঞ্চলকুমারীর হাতে দিলেন। চঞ্চল অসি ঘুরাইয়া মবারকের সম্মুখে তুলিয়া ধরিয়া বলিল,
“তবে যুদ্ধ করুন। রাজপুতেরা যুদ্ধ করিতে জানে। আর রাজপুতানার স্ত্রীলোকেরাও যুদ্ধ করিতে জানে। খাঁ সাহেব! আগে আমার সঙ্গে যুদ্ধ করুন। স্ত্রীহত্যা হইলে, আপনার বাদসাহের গৌরব বাড়িতে পারে।”
শুনিয়া, মোগল ঈষৎ হাসিল। চঞ্চলকুমারীর কথায় কোন উত্তর করিল না। কেবল রাজসিংহের মুখপানে চাহিয়া বলিল, “উদয়পুরের বীরেরা কত দিন হইতে স্ত্রীলোকের বাহুবলে রক্ষিত?”