পাতা:রাজসিংহ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ।
৮৯

অন্ন না দিয়া বহুকে তাড়াইয়া দিতে পারিবে না। সুতরাং বলিল, “বেশ বউ।”

 মাণিকলাল বলিল, “পিসী—বহুর সঙ্গে আমার আজিও বিবাহ হয় নাই।”

 পিসীমা বুঝিলেন, তবে এটা উপপত্নী। যো পাইয়া বলিল, “তবে আমার বাড়ীতে—”

 মাণিকলাল। “তার ভাবনা কি? বিয়ে দাও না? আজই বিবাহ হউক।”

 নির্ম্মল লজ্জায় অধোবদন হইল।

 পিসী মা আবার যো পাইলেন, বলিলেন, “সে ত সুখের কথা—তোমার বিবাহ দিব না ত কার বিবাহ দিব? তা বিবাহে ত কিছু খরচ চাই?”

 মাণিকলাল বলিল, “তার ভাবনা কি?”

 পাঠকের জানা থাকিতে পারে, যুদ্ধ হইলেই লুঠ হয়। মাণিকলাল যুদ্ধক্ষেত্র হইতে আসিবার সময়ে নিহত মোগলশিপাহীদিগের বস্ত্রমধ্যে অনুসন্ধান করিয়া কিছু সংগ্রহ করিয়া আসিয়াছিলেন—ঝনাৎ করিয়া পিসীর কাছে গোটাকত আশরাফি ফেলিয়া দিলেন, পিসী মা আনন্দে পরিপ্লুত হইয়া তাহ কুড়াইয়া লইয়া পেটারায় তুলিয়া রাখিয়া বিবাহের উদ্যোগ করিতে বাহির হইলেন। বিবাহের উদ্যোগের মধ্যে ফুল চন্দন, ও পুরোহিত সংগ্রহ, সুতরাং আশরাফিগুলি পিসী মাকে পেটরা হইতে আর বাহির করিতে হইল না। মাণিকলালের লাভের মধ্যে তিনি যথাশাস্ত্র নির্ম্মলকুমারীর স্বামী হইলেন।