পাতা:রাজা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যায় তখন মনে হয় তুমি স্বান করে তোমার শেফালিবনের পথ দিয়ে চলেছ, তোমার গলায় কুন্দকুলের মালা, তোমার বুকে শ্বেতচন্দনের ছাপ, তোমার মাথায় হালকা সাদা কাপড়ের উকীৰ, তোমার চোখের দৃষ্টি দিগন্তের পারে— তখন মনে হয় তুমি আমার পথিক বন্ধু। তোমার সঙ্গে যদি চলতে পারি তা হলে দিগন্তে দিগন্তে সোনার সিংহস্বার খুলে যাবে, শুভ্রতার ভিতর-মহলে প্রবেশ করব। আর, যদি না পারি, তবে এই বাতায়নের ধারে বসে কোন এক অনেক-দূরের জন্তে দীর্ঘনিশ্বাস উঠতে থাকবে ; কেবলই দিনের পর দিন, রাত্রির পর রাত্রি, অজ্ঞাত বনের পথশ্রেণী আর অনাস্ত্ৰাত ফুলের গন্ধের জন্তে বুকের ভিতরটা কেঁদে কেঁদে ঝুরে ঝুরে মরবে। আর, বসন্তকালে এই-যে সমস্ত বন রঙে রঙিন, এখন আমি তোমাকে দেখতে পাই কানে কুণ্ডল, হাতে অঙ্গদ, গায়ে বসন্তী রঙের উত্তরীয়, হাতে অশোকের মঞ্জরী, তানে তানে তোমার বীণার সব-কটি সোনার তার উতলা । রাজা। এত বিচিত্ররূপ দেখছ, তবে কেন সব বাদ দিয়ে কেবল একটি বিশেষ মূর্তি দেখতে চাচ্ছ ? সেটা যদি তোমার মনের মতো না হয় তবে তো সমস্ত গেল । সুদৰ্শনা । মনের মতো হবে নিশ্চয় জানি । রাজা । মন যদি তার মতো হয় তবেই সে মনের মতো হবে। আগে তাই হোক । সুদৰ্শন । সত্য বলছি এই অন্ধকারের মধ্যে যখন তোমাকে দেখতে না পাই, অথচ তুমি আছ বলে জানি, তখন এক-একবার কেমন একটা ভয়ে আমার বুকের ভিতরটা কেঁপে ওঠে । রাজা । সে ভয়ে দোষ কী ? প্রেমের মধ্যে ভয় না থাকলে তার রস হালকা হয়ে যায় । X (t