পাতা:রাজা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রোহিণী। সকলেই তো বলছে— ঐ দেখেন, তার জয়ধ্বনি এখান থেকে শোনা যাচ্ছে । সুদৰ্শন । তবে এক কাজ কর। পদ্মপাতায় করে এই ফুলগুলি র্তার হাতে দিয়ে আয় গে । রোহিণী । যদি জিজ্ঞাসা করেন কে দিলে ? সুদৰ্শন । তার কোনো উত্তর দিতে হবে না— তিনি ঠিক বুঝতে পারবেন । তার মনে ছিল আমি চিনতেই পারব না— ধরা পড়েছেন সেটা না জানিয়ে ছাড়ছি নে। (ফুল লইয়া রোহিণীর প্রস্থান ) আমার মন আজ এমনি চঞ্চল হয়েছে— এমন তো কোনোদিন হয় না। এই পূর্ণিমার আলো মদের ফেনার মতে চারি দিকে উপচিয়ে পড়ছে, আমাকে যেন মাতাল করে তুলেছে। ওগো, বসন্ত, যে-সব ভীরু লাজুক ফুল পাতার আড়ালে গভীর রাত্রে ফোটে, যেমন করে তাদের গন্ধ উড়িয়ে নিয়ে চলেছ তেমনি তুমি আমার মনকে হঠাৎ কোথায় উদাস করে দিলে, তাকে মাটিতে পা ফেলতে দিলে না— ওরে প্রতিহারী ! প্রতিহারী । ( প্রবেশ করিয়া ) কী মহারানী ! সুদৰ্শন । ঐ যে আম্রবনের বীথিকার ভিতর দিয়ে উৎসববালকেরা আজ গান গেয়ে যাচ্ছে— ডাক ডাক্‌, ওদের ডেকে নিয়ে আয়— একটু গান শুনি । ( প্রতিহারীর প্রস্থান ) ভগবান চন্দ্রম, আজ আমার এই চঞ্চলতার উপরে তুমি যেন কেবলই কটাক্ষপাত করছ । তোমার স্মিত কৌতুকে সমস্ত আকাশ যেন ভরে গেছে—কোথাও আমার আর লুকোবার জায়গা নেই— আমি কেমন আপনার দিকে চেয়ে আপনি লজ্জা পাচ্ছি। ভয় লজ্জা সুখ দুঃখ সব মিলে আমার বুকের মধ্যে আজ নৃত্য করছে । শরীরের রক্ত নাচছে, চারি দিকের জগৎ নাচছে, সমস্ত ঝাপসা ঠেকছে। & X