পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y e 8 রাজা প্রজা । এক, এখন হইয়াছে অনেক। এ কথাটা এতই সোজা ষে ইহা প্রমাণ করিবার জন্য কোনো স্বক্ষতর্কের প্রয়োজন হয় না। বাদশা যখন ছিলেন, তখন তিনি জানিতেন সমস্ত ভারতবর্ষ তারই, এখন ইংরেজজাত জানে ভারতবর্ষ তাহাদের সকলেরই। একটা রাজপরিবারমাত্র নহে, সমস্ত ইংরেজজাতটা এই ভারতবর্ষকে লইয়া সমৃদ্ধিসম্পন্ন श्ब्रां ऊँठिंब्रांदह । খুব সম্ভব বাদশাহের অত্যাচার যথেষ্ট ছিল—এখন অত্যাচার নাই কিন্তু বোঝা আছে। হাতির পিঠে মাহুত বসিয়া তাহাকে মাঝে মাঝে অস্কুশ দিয়া মারে, হাতির পক্ষে তাহ সুখকর নহে। কিন্তু মাহুতের বদলে যদি আর একটা গোটা হাতিকে সৰ্ব্বদা বহম করিতে হইত তবে বাহকটি অস্কুশের অভাবকেই আপনার একমাত্র সৌভাগ্য বলিয়া জ্ঞান করিত না । একটিমাত্র দেবতার পূজার থালায় যদি ফুল সাজাইয়া দেওয়া যায়, তবে তাহা দেখিতে স্ত,পাকার হইতে পারে এবং যে ব্যক্তি ফুল আহরণ করিয়াছে তাহার পরিশ্রমটাও হয় ত অত্যন্ত প্রত্যক্ষরূপে দেখা যায়। কিন্তু তেত্রিশকোটি দেবতাকে একটা করিয়া পাপড়িও যদি দেওয়া যায়, তবে তাহা চোখে দেখিতে যতই সামান্ত হউক না কেন তলে তলে ব্যাপারখানা বড় কম হয় না। তবে কি না এই একটা একটা করিয়া পাপড়ির হিসাব এক জায়গায় সংগ্রহ করা কঠিন বলিয়া নিজের অদৃষ্টকে ছাড়া আর কাহাকেও দায়ী করার কথা মনেও উদয় হয় না । কিন্তু এখানে কাহাকেও বিশেষরূপে দায়ী করিবার কথা হইতেছে না । মোগলের চেয়ে ইংরেজ ভাল কি মন্দ তাহার বিচার করিয়া বিশেষ কোনো লাভ নাই। তবে কি না অবস্থাটা জানা চাই, তাহ হইলে অনেক বৃথা আশা ও ৰিফল চেষ্টার হাত হইতে রক্ষা পাওয়া যায়, সেও একটা লাভ । মনে কর,—এই যে আমরা আক্ষেপ করিয়া মরিতেছি দেশের বড় বড় চাকরি প্রায় ইংরেজের ভাগ্যে পড়িতেছে ইহার প্রতিকারটা কোনখানে ?