পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথ ও পাথেয় । > R○ আবির্ভূত হইয়াছে বলিয়াই আমাদের মধ্যে কেহ কেহ দেশের শক্তিকে বিরোধের মূৰ্ত্তিতেই প্রকাশ করিবার দুৰ্ব্বদ্ধি অস্তরে পোষণ করিতেছেন কিন্তু যাহারা সহজ অবস্থায় কোন দিন স্বাভাবিক অনুরাগের দ্বারা দেশের হিতামৃষ্ঠানে ক্রমান্বয়ে অভ্যস্ত হয় নাই, যাহার উচ্চ সংকল্পকে বহুদিনের ধৈৰ্য্যে নানা উপকরণে নানা বাধা বিয়ের ভিতর দিয়া গড়িয়া তুলিবার কাজে নিজের প্রকৃতিকে প্রস্তুত করে নাই, অনেকদিন ধরিয়া রাষ্ট্রচালনার বৃহৎ কাৰ্য্যক্ষেত্র হইতে দুর্ভাগ্যক্রমে বঞ্চিত হইয়া যাহারা ক্ষুদ্র স্বার্থের অমুসরণে সঙ্কীর্ণভাবে জীবনের কাজ করিয়া আসিয়াছে তাহার। হঠাৎ বিষম রাগ করিয়া এক নিমেষে দেশের একটা মস্ত হিত করিয়া ফেলিবে ইহা কোন মতেই সম্ভবপর হইতে পারে না। ঠাণ্ডার দিনে নৌকার কাছেও ঘেসিলাম না, তুফানের দিনে তাড়াতাড়ি হাল ধরিয়া অসামান্ত মাঝি বলিয়া দেশে বিদেশে বাহবা লইব এইরূপ আশ্চৰ্য্য ব্যাপার স্বপ্নে ঘটাই সম্ভব। অতএব আমাদিগকেও কাজ একেবারে সেই গোড়ার দিক হইতেই সুরু করিতে হইবে। তাহাতে বিলম্ব হইতে পারে—বিপরীত উপায়ে আরো অনেক বেশি বিলম্ব হইবে। মানুষ বিস্তীর্ণ মঙ্গলকে স্বষ্টি করে তপস্তাদ্বারা। ক্রোধে বা কামে সেই তপস্তা ভঙ্গ করে, এবং তপস্তার ফলকে এক মুহূর্তে নষ্ট করিয়া দেয় । নিশ্চয়ই আমাদের দেশেও কল্যাণময় চেষ্টা নিভৃতে তপস্তা করিতেছে ; দ্রুত ফললাভের লোভ তাহার নাই, সাময়িক আশাভঙ্গের ক্রোধকে সে সংযত করিয়াছে ; এমন সময় আজ অকস্মাৎ ধৈর্য্যহীন উন্মত্ততা যজ্ঞক্ষেত্রে রক্তবৃষ্টি করিয়া তাহার বহুহুঃখসঞ্চিত তপস্তার ফলকে কলুষিত করিয়া নষ্ট করিবার উপক্রম করিতেছে। ক্রোধের আবেগ তপস্তাকে বিশ্বাসই করে না ; তাছাকে নিশ্চেষ্টত বলিয়া মনে করে, তাহাকে নিজের আগু উদ্দেগুসিদ্ধির প্রধান অন্তরায় ৰলিয়া ঘৃণা করে ; উৎপাতেরম্বারা সেই তপঃসাধনাকে চঞ্চল মুতরাং