পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথ ও পাথেয় । >ぐ)) কাজই হউক লেশমাত্র অন্যায়ের দ্বারা তাহার সমর্থন করিতে হইবে একথা আমি কোনো মতেই স্বীকার করিতে পারি না। বিলম্ব ভাল, প্রতিকূলতা ভাল, তাহাতে ভিত্তিকে পাকা, কৰ্ম্মকে পরিণত করিয়া তুলে ; কিন্তু এমন কোনো ইন্দ্রজাল ভাল নহে যাহা একরাত্রে কোঠা বানাইয়া দেয় এবং আশ্বাস দিয়া বলে আমাকে উচিত মূল্য নগদ তহবিল হইতে দিবার কোনো প্রয়োজন নাই। কিন্তু হায়, মনে না কি ভয় আছে যে একমুহুর্তের মধ্যে ম্যাঞ্চেষ্টরের কল যদি বন্ধ করিয়া দিতে না পারি তবে দীর্ঘকাল ধরিয়া এই দুঃসাধ্য উদ্দেশু, অটল নিষ্ঠার সহিত বহন করিবার শক্তি আমাদের নাই ; সেইজন্য এবং কোনোমতে হাতে হাতে পার্টিশনের প্রতিশোধ লইবার তাড়নায় আমরা পথ বিপথ বিচার করিতেই চাই নাই । এইরূপে চারিদিক হইতে সাময়িক তাগিদের বধিরকর কলকলায় বিভ্রান্তু হইয়া নিজের প্রতি বিশ্বাসবিহীন দুৰ্ব্বলতা স্বভাবকে অশ্রদ্ধা করিয়া, শুভবুদ্ধিকে অমান্ত করিয়া অতি সত্বর লাভ চুকাইয়া লইতে চায় এবং পরে অতি দীর্ঘকাল ধরিয়া ক্ষতির নিকাশ করিতে থাকে ; মঙ্গলকে পীড়িত করিয়া মঙ্গল পাইব, স্বাধীনতার মূলে আঘাত করিয়া স্বাধীনতালাভ করিব ইহা কখনো হইতেই পারেনা একথা মনে আনিতেও তাহার ইচ্ছা হয় না। আমরা অনেকে সম্পূর্ণ জানিনা এবং অনেকে স্বীকার করিতে অনিচ্ছুক যে, বয়কট ব্যাপারটা অনেকস্থলে দেশের লোকের প্রতি দেশের লোকের অত্যাচারের দ্বারা সাধিত হইয়াছে। আমি যেটাকে ভালো বুঝি দৃষ্টাস্ত এবং উপদেশের দ্বারা অন্ত সকলকে তাহা বুঝাইবার বিলম্ব যদি না সহে, পরের ন্যায্য অধিকারে বলপূৰ্ব্বক হস্তক্ষেপ করাকে অন্তায় মনে করিবার অভ্যাস যদি দেশ হইতে চলিয়া যাইতে থাকে তবে অসংযমকে কোনো সীমার মধ্যে আর ঠেকাইয়া রাখা অসম্ভব হইয়া পড়ে। কৰ্ত্তব্যের নামে যখন অকৰ্ত্তব্য প্রবল হয় তখন দেখিতে দেখিতে সমস্ত দেশ অপ্রকৃতিস্থ হইয়া উঠে। সেই জন্যই স্বাধীনতালাভের দোহাই দিয়া আমরা যথার্থ