পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অত্যুক্তি। レアン আছে—ওদিকে প্রাচ্যসম্রাটের নকলটুকু না করিলে নয়। আমরা দেশব্যাপী অনশনের দিনে এই নিতান্ত ভূয়া দরবারের আড়ম্বর দেখিয়া ভীত হইয়াছিলাম বলিয়া কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়া বলিয়াছেন –খরচ খুম বেশি হইবে না, যাহাও হইবে, তাহার অৰ্দ্ধেক আদায় করিয়া লইতে পারিব। কিন্তু সে দিন উৎসব করা চলে না, যেদিন খরচপত্র সাম্‌লাইয়া চলিতে হয়। তহবিলের টানাটানি লইয়া উৎসব করিতে হইলে, নিজের খরচ বাচাইবার দিকে দৃষ্টি রাখিয়া অন্তের খরচের প্রতি উদাসীন হইতে হয়। তাই আগামী দরবারে সম্রাটের নায়েব অল্প খরচে কাজ চালাইবেন বটে, কিন্তু আড়ম্বরটাকে স্ফীত করিয়া তুলিবার জন্ত রাজাদিগকে খরচ করাইবেন । প্রত্যেক রাজাকে অন্তত ক'টা হাতী, ক’টা ঘোড়া, ক’জন লোক আনিতে হইবে, শুনিতেছি তাহার অনুশাসন জারি হইয়াছে । সেই সকল রজাদেরই হাতিঘোড়া-লোকলস্করে যথাসম্ভব অল্প খরচে চতুর সম্রাট্রপ্রতিনিধি যথাসম্ভব বৃহংব্যাপার ফাদিয়া তুলিবেন । ইহাতে চাতুৰ্য্য ও প্রতাপের পরিচয় পাওয়া যায়, কিন্তু বদান্তত ও ঔদার্য্য—প্রাচা সম্প্রদায়ের মতে যাহা রাজকীয় উৎসবের প্রাণ বলিলেই হয় তাহা ইহার মধ্যে থাকে না । এক চক্ষু ঢাকার থলিটির দিকে এবং অন্ত চক্ষু সাবেক বাদশাহের অনুকরণকার্য্যে নিযুক্ত রাখিয়া এ সকল কাজ চলে না। এ সব কাজ যে স্বভাবত পারে, সেই পারে এবং তাহাকেই শোভা পায়। ইতিমধ্যে আমাদের দেশের একটি ক্ষুদ্র রাজ সম্রাটের অভিষেক উপলক্ষে তাহার প্রজাদিগকে বহুসহস্র টাকা খাজনা মাপ দিয়াছেন । আমাদের মনে হইল, ভারতবর্ষের রাজকায় উৎসব কি ভাবে চালাইতে হয়, ভারতবর্ষীয় এই রাজার্টি তাহা ইংরেজ কর্তৃপক্ষদিগকে শিক্ষা দিলেন । কিন্তু যাহারা নকল করে, তাহারা আসল শিক্ষাটুকু গ্রহণ করে না, তাহার বাহ আড়ম্বরটাকেই ধরিতে পারে। তপ্তবালুক হুর্য্যের মত তাপ দেয়, কিন্তু আলোক দেয় না । সেইজন্ত তপ্তবালুকার তাপকে আমাদের দেশে