পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br R রাজা প্রজা । অসহ অতিশয্যের উদাহরণ বলিয়া উল্লেখ করে । আগামী দিল্লিদরবার ও সেইরূপ প্রতাপ বিকিরণ করিবে, কিন্তু আশা ও আনন্দ দিবে না। শুদ্ধমাত্র দন্ত-প্রকাশ সম্রাটুকেও শোভা পায় না—ওঁদার্য্যের দ্বারা—দয়াদাক্ষিণ্যের দ্বারা দুঃসহ দস্তকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখাই যথার্থ রাজেচিত। আগামী দরবারে ভারতবর্ষ তাহার সমস্ত রাজরাজষ্ঠ লইয়া বৰ্ত্তমান বাদশাহের নায়েবের কাছে নতিস্বীকার করিতে বাইবে, কিন্তু বাদশাহ তাহাকে কি সম্মান, কি সম্পদ, কোন অধিকার দান করিবেন ? কিছুই নহে। ইহাতে যে কেবল ভারতবর্ষের অবনতিস্বীকার তাহা নহে, এইরূপ শূন্তগৰ্ত্ত আকস্মিক দরবারের বিপুল কাপণ্যে ইংরেজের রাজমহিমা প্রাচ্যজাতির নিকট খৰ্ব্ব না হইয়া থাকিতে পারে না । যে সকল কাজ ইংরেজী দস্তুরমতে সম্পন্ন হয়, তাহা আমাদের প্রথার সঙ্গে না মিলিলেও সে সম্বন্ধে আমরা চুপ করিয়া থাকিতে বাধ্য। যেমন, আমাদের দেশে বরাবর রাজার আগমনে বা রাজকীয় শুভকৰ্ম্মাদিতে যে সকল উৎসব আমোদ হইত, তাহার ব্যয় রাজাই বহন করিতেন, প্রজার জন্মতিথি প্রভৃতি নানাপ্রকার উপলক্ষ্যে রাজার অনুগ্রহ লাভ করিত। এখন ঠিক তাহার উণ্ট হইয়াছে। রাজা জন্মিলে-মরিলে নড়িলে-চড়িলে প্রজার কাছে রাজার তরফ হইতে চাদার খাতা বাহির হয়, রাজা-রায়বাহাদুর প্রভৃতি খেতাবের রাজকীয় নিলামের দোকান জমিয়া উঠে। আকবর-শাজাহান প্রভৃতি বাশার নিজেদের কীৰ্ত্তি নিজেরা রাখিয়া গেছেন,—এখনকার দিনে রাজকৰ্ম্মচারীরা নানা ছলে নানা কৌশলে প্রজাদের কাছ হইতে বড় বড় কীৰ্ত্তিস্তম্ভ আদায় করিয়া লন । এই ষে সম্রাটের প্রতিনিধি স্বৰ্য্যবংশীয় ক্ষত্রিয় রাজাদিগকে সেলাম দিবার জন্ত ডাকিয়াছেন, ইনি নিজের দানের দ্বারায় কোথায় দীঘি খনন করাইয়াছেন, কোথায় পান্থশালা নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন, কোথায় দেশের বিদ্যাশিক্ষা ও শিল্পচর্চাকে আশ্রয় দান করিয়াছেন ? সেকালে বাদশারা, নবাবর,