পাতা:রাণী না খুনি? (শেষ অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাণী না খুনী?
৪৭

 মোকদ্দমা প্রথমতঃ মাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট প্রেরিত হইল। কেবলমাত্র কালীবাবুর কথা ব্যতীত ত্রৈলোক্যের বিপক্ষে আর কোনরূপ প্রমাণ সংগ্রহ করিতে পারিলাম না। কালীবাবু যে বাড়ী ভাড়া লইয়াছিল, তাহার অধিকারীকে যখন বলিলাম, “আপনি আপনার এই ভাড়াটিয়া বাটীতে এই ত্রৈলোক্যকে কখনও আসিতে দেখিয়াছিলেন?” তখন তিনি তাহার কিছুই বলিতে পারিলেন না। কেবলমাত্র ইহাই বলিলেন, “আমার নিকট হইতে কালীবাবু আমার বাটীর চাবি লইয়া আসিলে, আমার বাটীতে কেহ আসিয়া বাস করিয়াছিল কি না, তাহা জানি না, বা দেখি নাই।” জহরতের দোকানেরও কোন ব্যক্তিই রাণীজিকে দেখে নাই; সুতরাং কেহই ত্রৈলোক্যকে সনাক্ত করিতে পারিল না। সহিস-কোচবান্‌ দোকানদার প্রভৃতিও কেহই ত্রৈলোক্যকে রাণীজি বলিয়া চিনিতে পারিল না। সুতরাং মাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট হইতে সে যাত্রা ত্রৈলোক্য নিষ্কৃতি লাভ করিল।

 কালীবাবুর নিষ্কৃতির উপায় রহিল না। প্রথমতঃ কালী বাবু বাড়ীওযালার নিকট একমাসের বন্দোবস্তে বাটী ভাড়া লইয়া চাবিটী লইয়া আসিয়াছিল বটে; কিন্তু দুই তিনদিবসের মধোই বাটীর প্রয়োজন হইল না বলিয়া, সেই চাবি প্রত্যর্পণ করিয়াছিল। সেই দুই তিনদিবসের মধ্যেই সেই বীভৎস-কাণ্ড সকলের অজ্ঞাতসারে কালীবাবু কর্ত্তৃক সম্পাদিত হইয়াছিল, একথা ত দোষী নিজ মুখেই ব্যক্ত করিয়াছিল। অধিকন্তু বাড়ীওয়ালা, সহিস-কোচবান্‌ প্রভৃতির সাক্ষ্যে ও সেনাক্তে তাহা একরূপ প্রমাণীকৃত হইল; চাক্ষুষ প্রমাণ না থাকিলেও, ঘটনা-পরম্পরায় অবিরোধী সমবায়ত্ব প্রমাণে কালীবাবু দোষ-মুক্ত হইতে সমর্থ হইল না। আড়গোড়ায়