পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>' মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। স্তরে, জায়গিরদারের যতই কেন ক্ষমতাশালী হউন না, যবন রাজত্বের শেষ সময়ে দুর্দান্ত মহারাষ্ট্রীয় বারগির * ও ভোজপুরিয়া দমু্যদিগের হস্তে কাহারই নিস্তার ছিল না । ইহারা বিপুল সেনাসমাবেশের সহিত যোদ্ধৃবেশে দস্থ্যতা করিত। সুতরাং এই সকল প্রবল শত্রুর আক্রমণ হইতে রক্ষার জন্ত, বঙ্গদেশের প্রাচীন ভূম্যধিকারিগণ, প্রকৃতির স্বাভাবিক দুর্গস্বরূপ, বন ও জলাকীর্ণ ভূভাগে বাস করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। রাজসাহীর মধ্যে হল জ্য পরিখাস্বরূপ পদ্মানদী থাকিলেও, অবারিত স্থান বলিয়া, তাহার তীরে কোন সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তি বাস করিতেন ন। তাহাতেই এ অঞ্চলে পদ্মাতীরে গওগ্রাম কি নগরের চিহ্ন দেখা যায় না। বৰ্ত্তমান বোয়ালিয়া নগরীতে ৭০ বৎসরের পূৰ্ব্বে, দুই চারি ঘর রেসমব্যবসায়ী ব্যতীত, কোন ভূম্যধিকারীর নিবাসচিহ্ন লক্ষিত হয় না। খৃষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে ওলন্দাজের বোয়ালিয়াতে একটা কুণ্ঠ নিৰ্ম্মাণ দ্বার, রাজসাহী অঞ্চলে রেসমের ব্যবসায় আরম্ভ করেন। পরে ইষ্টইণ্ডিয়া কোম্পানী, এই কুঠী ওলন্দাজদিগের নিকট ক্রয় করেন । সংপ্রতি তাহ “বড়কুঠী” নামে, ওয়াটসন কোম্পানীর সম্পত্তি । প্রায় টারিশত বৎসর পূৰ্ব্বে বোয়ালিয়ার দুই ক্রোশ দক্ষিণে, মহানন্দ নদী বহমান ছিল । তাহার অনেক দূর দক্ষিণে পদ্মানদী প্রবাহিত হইয়৷ সরদহের নিকট, উভয় নদীর সংযোগ হইয়াছিল । কালের পরিবর্তনে মহানন্দ ও পদ্মা এক হইয়া, বোয়ালিয়ার পুৰ্ব্ব অবস্থার পরিবর্তন করিয়াছে। প্রস্তাবিত কুঠীর অব্যবহিত পূৰ্ব্ব দিক দিয়া,

  • পারস্তভাষায় বারগির শব্দে অশ্বারোহী বুঝায় । মহারাষ্ট্র দস্থ্যর অশ্বারোহণে বিশেষ পারদর্শী। তাহারা অশ্বন্ধঢ় হইয়া অতি দ্রুতবেগে, পাৰ্ব্বত্য বন্ধুর পথসকল যেরূপে উত্তীর্ণ হইতে পারিত, ভারতবর্ষের কোনজাতিই তাহার অনুকরণে ক্ষমবান ছিল না। এই বারগির দস্তাগণ, বৰ্ত্তমান নাগপুর প্রদেশের দুর্গম বনাকীর্ণ গিরিপথ, অতিক্রম করিয়া উড়িষ্য ও বঙ্গদেশে আপতিত হইয়া দয়াত করিত। এদেশে তাহারাই “বগাঁ” নামে প্রসিদ্ধ ।