পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎসু নদয়ীর জীবন-চরিত। *> হৃদয়ে আত্মদুঃখে বিস্মৃতি, ত্যাগ, ক্ষমা ও পরদুঃখ কাতরতা প্রভৃতি গুণের উন্নতি লাভ হইয়াছিল । তিনি, এক একটা দুঃখের চিত্র দেখিতেন, আর তাহার মূল প্রকৃতি, তাহাকে সংসারের দূর হইতে দুরতর স্থানে बईवांद्र জন্ত উদ্বোধন করিত। পাচ বৎসর বয়সের বালিকার, এরূপ পরদুঃখ কাতরতায় সহানুভূতি, পরোপকার চেষ্টা, অন্যত্র দুল্লভ না হইলেও, অসাধারণ বলিতে হইবে । শরৎস্বন্দরী, ভাল আহারীয়, কি উত্তম পরিচ্ছদদির নিমিত্ত, এক দিনের জন্যও আগ্রহ করিতেন না। আপনার ভাগের খাদ্য, অন্তকে বিতরণ করিয়া দিয়া অবশিষ্ট নিজে খাইতেন। কোনও তামসিক উৎসবে, স্বেচ্ছায় যোগ দিতেন না। র্তাহার মূৰ্ত্তি অতি শাস্ত, ধীর, এবং অমায়িকতার লাবণ্যে জড়িত ছিল । এবং মুখের দিকে লক্ষ্য করিলে, যেন, গুরুতর চিন্তাশীলতার স্বগীয়ভাবে অভুিভূত বলিয়া বোধ হইত। তিনি, ধনাঢ্য পিতা মাতার একমাত্র কন্য। বলিয়া, পরম আদরের পাত্রী ছিলেন । র্তাহার পিতা, তাহাকে সৰ্ব্বদ। নানা ভোগসুখে রাখিতে চেষ্টা করিতেন ;–নানা প্রকার উত্তম উত্তম খাদ্য ও পরিচ্ছদাদি দিতেন। কিন্তু, বালিকার হৃদয়ে ভোগেচ্ছার লেশমাত্রও ছিল না । তজ্জন্ত পিত। মাতার সাধপূর্ণ হইত না । এখন তাহার সেই বাল্যব্যবহার স্মরণ করলে বুঝা যায় যে, তিনি, শৈশবেই যেন, আপনার প্রাক্তনলিপি পাঠ করিয়াছিলেন।* যেন বুঝিয়া ছিলেন, যে, তাহার ভবিষ্য-জীবন ঘোরতম দুঃখময় । তাহতেই তাহার জীবনের কৰ্ত্তব্যগুলি, যেন ধীরে ধীরে

  • ভৈরবনাথের মতে, শরৎ সুন্দরীর অক্ৰবাণাবস্থায় একজন গণকের স্বারা ভাগ্যগণনায় জানিয়াছিলেন যে, তিনি অল্প বয়সে বিধবা হইবেন । সেই হইতে ভৈরব নাথের মাতা, পৌত্রীকে বাল্য উত্তীর্ণ ভিন্ন বিবাহ দিবেন না বলিয়া স্থির করিয়াছিলেন । কিন্তু, বিধিলিপি অসাধ্য। উপযুক্ত বর পাইয়া তাহার বয়স ছয় বৎসর পূর্ণ না

হইতেই বিবাহ হয় ।