পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* মহারাণী শরৎকুন্দরীর জীবন-চরিত। তিনি সঙ্কল্প ভঙ্গ করিলেন না। শরীর যতই ক্ষয় পাইতে লাগিল, উৎসাহও ততই বাড়িতে লাগিল। অবশেষে আপনার সমস্ত ভবিতব্য বিস্তৃত হইয়া নীলকরের বিরুদ্ধে দরিদ্র প্রজাদিগকে বাহুবল আশ্রয় জন্ত উৎসাহিত করিলেন। তাহার এই মহাপুণ্য কাৰ্য্য,—এই সৰ্ব্বস্ব ত্যাগ প্রতিজ্ঞা জানিতে পাইয়। অন্তের অধিকারস্থ সহস্ৰ সহস্র দরিদ্র প্রজা আসিয়া তাহার আশ্রয় গ্রহণ করিল। তিনি পরম আহলাদে আত্মপর নিৰ্ব্বিশেষে সকলেরই পৃষ্ঠপোষক হইলেন। অতি অল্প দিনের মধ্যে সহস্ৰ সহস্ৰ লাঠীয়াল, প্রজাদিগের স্বার্থ রক্ষার জন্ত নিযুক্ত হইল । নীলকরদিগেরও বলসংগ্রহে ক্রটি ছিল না। কিন্তু, গ্রামে গ্রামে সমস্ত প্রজা দলৰদ্ধ, সকলেই জীবনের শেষ উদ্যমে ক্ষিপ্ত হইল, তখন কুঠীয়ালদিগের মুষ্টিমেয় ঠিক। লাটয়ালে আর কি করিতে পারে ? যখন, দেশব্যাপী অনলের নির্বাণ কর। নীলকরদিগের অসাধ্য হইল, তখন, অনেক স্বদেশ প্রেমিক রাজকৰ্ম্মচারী, সুবিচার বলে দলে দলে প্রজাদিগকে কারাগারে দিতে আরম্ভ করিলেন ; কিন্তু, কিছুতেই কিছু হইল না। নিরীহ প্রজারাও উত্তরোত্তর সংকল্প সাধনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইতে লাগিল। সে সময়ে কোন কোন রাজকৰ্ম্মচারীর চৈতন্য হইল। কেহ কেহ তখন পর্য্যন্তও আপনার কর্তব্যে দোষ দেখিতে পাইলেন না। রাজসাহীর কুঠীয়াল-বন্ধু মাজিষ্ট্রেট মিঃ টেলার শেষোক্ত শ্রেণীর লোক ছিলেন । কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় যে, গবর্ণমেণ্ট তাহার হাতে কোর্ট মাশেলের ক্ষমতা দিয়াছিলেন না ; সেরূপ ক্ষমতা থাকিলে গাছে গাছে নিরীহ প্রজা দোদুল্যমান হইত কি না, কে বলিতে পারে। যোগেন্দ্রনারায়ণ ধৰ্ম্মবলে জয়লাভ করিলেন । চক্ৰকলা প্রভৃতি স্থানের নীলকুঠ কয়েকট অতি অল্পদিনের মধ্যে জনশূন্ত হইল । নীল