পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎস্বন্দরীর জীবন-চরিত। #5 ত্যাগে অসন্মত ছিলেন, তাহার জন্ত দেওয়ানী মোকদ্দমা করিতে বাধ্য। হইলেন। তাহার অকপট সাৰ্ব্বজনীন উদারতায়, নিতান্ত শক্রও, নত শিরে বাধ্য হইতে লাগিল । অনেক স্থলেই দেখা যায় যে, বহু অংশী থাকিলে পরস্পরের মধ্যে চিরকালই প্রায় কিছু না কিছু বিবাদের স্বত্র চলিয়াই থাকে। বরং ধনীদিগের মধ্যে স্ত্রী কর্তৃত্বের সময়, স্বার্থশীল কৰ্ম্মচারিগণ স্বার্থ সাধনের নিমিত্ত ঐৰূপ জ্ঞাতিবিরোধের নানা কৌশল উদ্ভাবন করিয়া থাকে ; কিন্তু মনস্বিনী উদার প্রকৃতি শরৎসুন্দরীর নিকটে কেহই তদ্বিষয়ে কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই। বহুদিন হইতে যে যে অংশীদিগের বাড়ীতে গতিবিধির নিয়ম পৰ্য্যন্ত উঠিয়া গিয়াছিল, তিনি সে সকল স্থানে স্বয়ং যাইয়া সাক্ষাৎ করিয়া এরূপ অকপট আপ্যায়িত করিতেন যে, যদি কাহার মনেও ইচ্ছা না থাকিত, শরৎসুন্দরীর ব্যবহারে তাহাকেও চক্ষুলজ্জায়, কৃতজ্ঞতায় বাধ্য না হইয়া উপায় ছিল না। তিনি, অকপট চিন্তে দুৰ্ব্বল অংশীদিগের যথাসাধ্য অর্থানুকূল্য করিতেও ক্রট করিতেন না । * অতএব, র্তাহার সহিত শক্রতা দূরের কথা, অল্পদিনের মধ্যে সকল অংশীই, তাহার বশতাপন্ন হইলেন । এইরূপে দেশের মধ্যে র্তাহার সুকীৰ্ত্তি সৰ্ব্বত্র প্রচারিত হইল। তিনি, যদিচ সমস্ত সম্পত্তির সৰ্ব্বময়ী কী, তথাপি, প্রধান প্রধান

  • শরৎকুন্দরীর অপর অংশী, রাজা ভৈরবেন্দ্রনারায়ণ, দৈলদুৰ্ব্বিপাকে সমস্ত সম্পত্তি হারাইয়া ছিলেন । র্ত হার পরিবারবর্গকে সুখে তীর্থবাস করিবার এবং সৰ্ব্ব প্রকারে ভরণপোষণের ব্যয়, শরৎকুন্দরী আনন্দের সহিত বহন করিতেন । তদ্ভিন্ন এক আনার অংশী কুমার গোপালেন্দ্রনারায়ণ রায়ের সম্পত্তি কোর্ট অব ওয়ার্ডেশের তত্ত্বাবধানে থাক কালে কুমারের বিবাহের সম্বন্ধ হয়। কিন্তু রাজানুপালিতের পরিরক্ষক কলেক্টর সুাহেব বিবাহের ব্যয় এত সামান্য টাকা দিয়াছিলেন, যে তদ্বারা পুঠিয়া রাজবংশের সম্মান রক্ষা হয় না । শরৎসুন্দরী, আনন্দের সহিত ছয় হাজার টাকা দিয়া বিবাহ নির্বাহ করাইয়াছিলেন । এবং প্রস্তাবিত কুমারের মাতৃশ্ৰাদ্ধেও বিস্তর টাকা সাহায্য করিয়াছিলেন ।