পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| 4 | মাইকেল মধুসূদন, আর প্রাচীন মুকুন্দরামের নাম উল্লেখ করিতেছি। ইহঁরা দুই জনেই ইহধাম পরিত্যাগ করিয়াছেন। মুকুন্দরাম স্বপ্রণীত চওঁীতে আপনার জীবনের যে কিঞ্চিৎ ছায়া দিয়াছেন, তাহা ভিন্ন তাহার জীবনী নাই। কবিবর মধুস্থদন অল্পদিন হইল অন্তৰ্হিত হইয়াছেন, তাহার জীবনীও প্রকাশিত হইয়াছে। মধুর মধুময় “চতুর্দশ পদী কবিতাবলী” আর "মেঘনাদবধ” কাব্য, তাহার জীবনীর সঙ্গে আলোচনা করিলে, কবির উপদেশ, অনুতাপ, আত্মগ্লানি অক্ষরে সুক্ষরে অনুভূত হয় । চণ্ডীতে মুকুন্দরাম, আপনার চিত্র, যে কিছু দিয়াছেন, তাহাতেই ফুল্লরার দুঃখ কড়ায় কড়ায় বুঝা যায়।—বুঝা যায় কালকেতু, আর ফুল্লর, কবি হৃদয়ের জাজ্জ্বল্যমান মূৰ্ত্তি। ফুল্লরাতে “দুঃখেঘমুদ্বিগ্নমনা: সুখেষু বিগত স্পৃহঃ”—এই ভগবঢুক্তির সত্যতা আছে । দুঃখের চরম “আমানী খাবার গৰ্ত্ত দেখ বিদ্যমান।” জগতের আদ্যশক্তির সাক্ষাৎলাভ,—প্রচুর ঐশ্বৰ্য্যলাভে বিগতস্পৃহার কিরূপ মনোজ্ঞ-চিত্র । কবি, আপনার সুখে আপনার দুঃখে, যথাকাল প্রবোধি । তিনি, রাজকৰ্ম্মচারীর বিকট দৌরাত্ম্য সহিয়াও—ভাগ্যের কঠোর নিগ্ৰহ ভোগ করিয়াও যে, ধৰ্ম্ম-ভ্রষ্ট হইতে পারেন নাই, তাহ “—নৈবেদ্যে শালুকলাড়া—” উক্তিতেই প্রমাণ। ফলতঃ কবি, আপনার দুঃখের দশ গোপন রাখিলে তাহার প্রণীত পুস্তকের মাহাত্ম্য বুঝা যাইত না । পুরাণরচয়িতাগণ, না থাকিলে ভারতে লক্ষ লক্ষ বীরের অভিনয়,— লক্ষ লক্ষ সতীর চিত্র,—লক্ষ লক্ষ ধৰ্ম্মাত্মার আবির্ভাব দেখা যাইত না । সক্রেটিস, নিউটন প্রভূতি পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের জন্মদাতাগণ, আবিভূত হইয়াছিলেন বলিয়া, আজি, ইউরোপ আমেরিকার এত উন্নতি ; আর -আমরাও, সুখ্যান-রেলগাড়ী প্রভৃতি বৈজ্ঞানিক ফলে, জীবনের এক নুতন যুগ দেখিতেছি। দর্শন কি বিজ্ঞান-বেত্তাগণ, আপনার হৃদয়ের