পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ సె8 ] প্রত্যংশ হইয়া যায়, সুতরাং মন দুৰ্ব্বল হইয়া পড়ে। মন আর স্বস্থানে থাকিতে পারে না, উহা নানাস্থানী হইয়া কিয়ৎ কালের মধ্যে অদৃশ্যপ্রায় হইয়া আইসে। পূর্ণমনে পূর্ণ লোভ বিরাজিত থাকে। ঐ লোভ হরির পাদপদ্ম দর্শনের জন্য নিযুক্ত হওয়া সাধকের অভিপ্রায় ; হরি কথা শুনিব, হরিনাম উচ্চারণ করিব, শ্ৰীহরির সেবা দ্বারা জীবন সার্থক করিব,এমন দিন কবে হইবে, এই লোভে তিনি সৰ্ব্বদা অপেক্ষা করিয়া থাকেন । মোহ অর্থে ভ্রম। সংসারে পদার্থদিগের সর্বদা পরিবর্তন দেখিয়৷ প্রকৃত বস্তুর সহিত ভ্রম জন্মিয়া থাকে। ভ্ৰমে দেহাদিতে আত্মবুদ্ধি বদ্ধমূল হয়। আত্মবুদ্ধিতে মনের অবস্থা সুতরাং স্থানভ্রষ্ট হইয়া থাকে। আত্মবুদ্ধিতে এ আপনার, ও পর ইত্যাকার ভ্ৰমজনিত কার্য্যে মনের পূর্ণতা সংরক্ষা হইতে পারে না। সংসারে মোহের এই অবস্থা। পূর্ণমনে পূর্ণমোহ বিরাজিত থাকে এবং সাংসারিক ভাবের সহিত ভগবানের প্রতি যাহাতে ভ্ৰম ন হইতে পারে, তাহার ব্যবস্থাপকরূপে প্রতীক্ষা করিয়া থাকে। যখনই সাংসারিক ভাব মনে প্রতিফলিত করিতে চেষ্টা করে, মোহ অমনি যাইয়া নিজের অবস্থ। দর্শনপটে দেখাইয়া বলে যে, যাহা কিছু দেখিতেছ, সমুদয় ভ্রম—সত্য, ভগবান । সাংসারিক ভাবে মনের অবস্থিতিকালীন আপন বস্তুতে ভ্রম জন্মানই ভ্রমের কার্য্য। যে স্থান হইতে আসিয়াছি, যে স্থানে যাইতে হইবে ; যিনি অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের একমাত্র সহায়, সম্পত্তি, উপায় এবং অবলম্বন, তাহাতে প্রতিক্ষণই, প্রতি কথায়, প্রত্যেক অবস্থায়, সন্দেহ, বিচার এবং কুতর্ক উত্থাপন পূৰ্ব্বক জীবনপথের পথিকদিগকে সৰ্ব্বস্ব জ্ঞান করান মোহের কার্য্য। মনের পূর্ণত হইলে মোহবৃত্তিও পূর্ণতা লাভ করে। তখনই সংসারের আভ্যন্তরিক রহস্ত ভেদ হইবার সম্ভাবন ।