পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ৯৬ ] মস্তকে বাধিতে লজ্জা হয় না, নাম রসের মত্ততায় তেমনি লজ্জা ঘৃণা ভয় এককালে চলিয়া যায়। বিষয়াদি মদে অচৈতন্য করে, কিন্তু নামরসে চৈতন্য-রাজ্যে গমন করিবার অধিকারী হওয়া যায়। সেই নিমিত্ত মনের বৃত্তিবিশেষ মদের আবশ্যকতা হইতেছে। মাৎসর্য্য বলিলে ঈর্ষা বা পরভাগ্যকাতরতা বুঝায়। আমরা সংসার-ক্ষেত্রে ঈর্ষাবৃত্তিটাকে যথোচিত মতে নিয়োজিত করিয়া রাখিয়াছি। এমন বিষয় নাই, যাহাতে আমাদের ঈর্ষ নাই। ঈর্ষার কার্য্য পরনিন্দ এবং বিদ্রুপ কর । পরনিন্দ করিতে আমরা সকলেই সিদ্ধ। এই বৃত্তিটা বাল্যকালেই প্রস্ফুটিত হয়, সুতরাং অল্প দিবসের মধ্যেই তাহার ফল ফলিতে আরম্ভ হইয়া থাকে । এই জন্য আমরা কাহার ভাল দেখিতে পারি না, কেহ দুই পয়সা উপাৰ্জ্জন করিয়া দুই সন্ধ্য। দুই মুঠা অন্ন উদরে আহুতি দিতে পারিলে তাহাকে না বলি এমন কথাই নাই। যে দিকে দৃষ্টিপাত করা যায়, সেই দিকেই ঈর্ষা দেদীপ্যমান রহিয়াছে । যদিও কখন কেহ কাহার মুখ্যাতি করেন, তাহাতেও ঈর্ষ পূৰ্ব্ববর্তী কারণরূপে অবস্থিতি করে । একজনকে অপদস্থ করিবার ছলে অপরকে প্রশংসা করা হয়। সৰ্ব্বত্রে এইরূপে ঈর্ষা ব্যয়িত হইয়া যায় এবং তাহার অশান্তি প্ৰদ ফল পাইয়া নীতিজ্ঞ ব্যক্তির অন্যান্য বৃত্তির ন্যায় ঈর্ষা বৃত্তিকেও পরিত্যাগ করিতে উপদেশ দিয়া থাকেন। ক্রমে এই বৃত্তিটা হ্রাস হইয়া আইসে ঈর্ষাবৃত্তি কমিয়া যাইলে আমাদের আর ভগবান লাভের প্রত্যাশ থাকে না । আমার সংসারক্ষেত্রে ঈর্মাকে নিরানন্দ প্রদানের নিদান বলিয়া বুঝি বটে এবং তাহার শক্তি ক্রমে হীনবল হইয়া আইসে বলিয়া তাহ হইতে আপনিই অব্যাহতি লাভ করিতে পারি, কিন্তু ভগবান লাভ করিবার পক্ষে যে চিরকালের