পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১২৭ ] ঔরসজাত বলিয়া সকলেই সাধনের অধিকারী হইবেন, ইহা একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু ব্রাহ্মণ আৰ্য্যদিগের বংশসস্তৃত এবং সামাজিক হিসাবে শ্ৰেষ্ঠবৰ্ণ ; এই নিমিত্ত সামাজিক সম্বন্ধে ব্রাহ্মণ উচ্চপদ অধিকার করিয়৷ আছেন এবং তজ্জন্য তাহারাই সৰ্ব্বাগ্রে প্রণম্য হইয়া থাকেন। সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক ভাৰ সম্পূর্ণ বিভিন্ন প্রকার। কোন ব্ৰাহ্মণ সামাজিক উন্নত হইতে পারেন, কিন্তু তাহ বলিয়া কি তিনি সৰ্ব্বপ্রকার বিষয়েই উন্নত হইবেন ? সামাজিক ক্রিয়াবিশেষে কিম্বা ব্যবসাবিশেষে তিনি অতি বিচক্ষণ এবং অতিশয় সুদক্ষ হইতে পারেন, কিন্তু ব্রাহ্মণ বলিয়া কি, যোগী তাহার নিকট যোগ শিক্ষা করিতে যাইবেন, অথব। তাহাকে কস্মিনকালে যোগী করা যাইতে পারিবে ? এরূপ স্থলে ব্রাহ্মণের যে ঈশ্বর সাধনায় একমাত্র অধিকারী, একথা বৰ্ত্তমান কালে একেবারে অসম্ভব । এক্ষণে কথা হইতেছে, তবে অধিকারী কাহার ? এবং হিন্দু শাস্ত্রে ব্রাহ্মণের সাধনায় অধিকারী বলিয়া যাহা লিপিবদ্ধ হইয়া আছে, তাহা মিথ্যা হইয়া যাইতেছে । আমি ইতিপূৰ্ব্বে অনেক স্থলে বলিয়াছি যে, শাস্ত্রবিশেষের ভ্রম প্রমাদ বাহির করিলে অন্য শাস্ত্রের এক পরমাণু মৰ্য্যাদা থাকিবে না । শাস্ত্রে যাহা উল্লিখিত হইয়াছে, তাহাও সত্য এবং প্রত্যক্ষ বা ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেহ মিথ্যা বলিতে পারেন না, তাহা জোর করিয়া মিথ্য বলিয়া প্রমাণ করিতে যাওয়া নিতাস্ত অসঙ্গ ত এবং বাচলত ব্যতীত তাহাকে আর কিছুই বলা যায় না। শাস্ত্র এবং ইতিহাসের বিবাদ মিটাইবার নিমিত্ত রামকৃষ্ণদেব অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, তিনি এই নিতাস্ত দুরূহ এবং সৰ্ব্বজনের অতিশয় প্রয়োজনীয় বিষয় সাধনের অধিকারী সম্বন্ধে যে প্রকার উপদেশ প্রদান করিয়াছেন, অস্ত তাহারই আলোচনা করা আমার অভিপ্রায় ।