পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ రి: ) দিয়াছিলেন, হরিদাস যবন হইয়া হিন্দুর ভগবানকে লাভ করিয়াছিলেন, ইহা দ্বারাও কি ঈশ্বরের সাধনায় অধিকারী নির্ণয় করা যায় না ? মহাপ্রভু শ্ৰীগৌরাঙ্গ যেরূপে অধম হরিদাসকে কৃপা করিয়াছিলেন, আমরা প্রভু রামকৃষ্ণদেবের লীলায়ও সেইপ্রকার দৃষ্টান্ত প্রত্যক্ষ করিয়াছি । উইলিয়ম নামক জনৈক খৃষ্টান প্রভুর নাম শুনিয়া তাহাকে দর্শন করিবার মানসে গুড ফ্রাইডের দিন দক্ষিণেশ্বরে গমন করিয়ছিলেন । তিনি খৃষ্টান, এ কথা যেন সকলের স্মরণ থাকে। রামকৃষ্ণদেবকে দর্শন করিবার জন্য উইলিয়মের কেন যে ইচ্ছা হইয়াছিল, তাহা তিনিই জানিতেন। তিনি দক্ষিণেশ্বরে প্রভুর গৃহের বহিদেশে কৃতাঞ্জলিবদ্ধ হইয়া দাড়াইবামাত্র রামকৃষ্ণদেশ উলঙ্গপ্রায় হইয়া ছুটিয়া যাইয় তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন। উইলিয়মের দুই চক্ষে গঙ্গ যমুনা বহিয়া গেল, তিনি একবার প্রভুর বদনকান্তি দর্শন করিয়। চরণ চুম্বন পূৰ্ব্বক হেঁট মস্তকে নয়নজলে প্রভুর চরণযুগল অভিষিক্ত করিতে লাগিলেন। সে সম্মিলনের কথা আমি কি বলিব ! সে অপূৰ্ব্ব ভক্ত ভগবানের সম্বন্ধ আমি কেমন করিয়া বর্ণনা করিব । সে কাহিনী বচনাতীত, ভাবাতীত ! আমি মূৰ্খ, সাধন ভজনবিহীন কেমন করিয়া ভক্ত ভগবানের আভ্যন্তরিক লীলার ব্যাপারের আভাসমাত্রও প্রদান করিতে কৃতকার্য্য হইব । চক্ষে যাহা দেখিয়াছি, তাহাই যথাসাধ্য বর্ণনা করিতে চেষ্টা করিলাম, ভাবময় যদ্যপি ইহার ভাব কাহাকে দয়া করিয়া প্রদান করেন, তাহ হইলে তিনি তাহ অবশ্যই প্রাণে প্রাণে উপলব্ধি করিতে পারিবেন। উইলিয়মকে রামকৃষ্ণদেব নিজ গৃহে লইয়। বাইয়া সম্মুখে উপবেশন করাইয়া কহিলেন যে, অত চিস্তিত হইতেছ কেন ? আর দুই দিন আসিলে তোমার মনোসাধ পূর্ণ হইবে। এ সম্বন্ধে অনেক কথা রহিল, তাহা প্রস্তাবাস্তরে আলোচনা করিব।