পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ >8२. ] স্থূল কাৰ্য্য ব্যতীত স্থা, অতি স্থল্ম ভাবেও কার্ষ্য হইয় থাকে। যদিও কাহার মনে কাঞ্চন ভাব সাময়িক অদৃপ্ত হইয়া যায় বটে, কিন্তু শরীরে তাহার সত্ত্বা থাকে বলিয়া মানসিক ও শারীরিক কার্য্যের দ্বারা কামিনী-কাঞ্চনের সঙ্কল্পিত কার্য্য সাধিত হইয়া যায়। রামকৃষ্ণদেব কহিয়াছেন যে, একদা কোন প্রৌঢ়াকে মুমুঘু ভাবাপন্ন। দেখিয়া তাহার পুত্রাদিরা গঙ্গাযাত্রা করিয়াছিল। গঙ্গাতীরে কিয়দিবস অবস্থিতি করিয়া সজ্ঞানে জাহ্নবী সলিলে জীবনাস্ত করাইলে পারলৌকিক মোক্ষপদ পাইবেন ভাবিয়া তাহার পরিজনের সময় বুঝিয়া অন্তর্জলি করিল। প্রৌঢ়ার অৰ্দ্ধেক অঙ্গ গঙ্গাজলে এবং অদ্ধাঙ্গ তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্রের ক্রোড়ে রহিল। এই সময়ে গঙ্গার ঢেউ উঠিতে লাগিল ; ঢেউএর দ্বারা প্রৌঢ়ার কটিদেশ স্পন্দিত হওন কালে জীবনান্ত হইয়া যায়। সজ্ঞানে ভাগিরথীর জলে মৃত্যু হইল দেখিয়া সকলে ভাগ্যবতী বলিয় তাহার অদৃষ্টকে শত ধন্যবাদ দিতে দিতে গৃহে প্রত্যাগমন করিল। কিন্তু তাহার পরিণাম কি হইল, সে কথা চিস্ত করিবে কে ? স্থলের কার্য্য স্থূল দর্শনের অধিকারভুক্ত, স্বল্পভাব তথার স্থান পাইতে পারে না। সজ্ঞানে গঙ্গাজলে মৃত্যু হইল বলিয়া যে পরমগতি লাভ করিতে হইবে, তাহার অর্থ নাই ; সেই প্রৌঢ়। বেখ্যার গর্ভে প্রবেশ করিলেন এবং পরে খ্যাতনাম বেগু হইয়। বিপুল ঐশ্বর্ঘ্যের অধিশ্বরী হইলেন। এ প্রকার ঘটনার তাৎপৰ্য্য বুঝিতে বাস্তবিক সাধারণ নরনারীর মস্তিষ্ক বিঘূর্ণিত হইয়া যাইবে, তাহার সন্দেহ নাই । গঙ্গায় মরিতে পারিলেই হয় না, স্বচ্ছন্দে পাপ ক্রিয়া সম্পন্ন করিয়া কোন মতে গঙ্গা বা তীর্থাদিতে মরিতে পারিলেই হয় না। স্থলে যদিও অনেক সময়ে তাহ হইতে পারে, কিন্তু স্থক্ষে তাহার যে প্রকার ফলোদয় হয়, বলিয়াছি তাহা স্কুল দৃষ্টির অতীত কথা ।