পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ e ] হইয়া থাকে। যেমন কোন ব্যক্তির দুই মোন চাউলের প্রয়োজন, কিন্তু সে তাহ বহন করিতে অশক্ত। তাহার দুই মোন প্রয়োজন বলিয়া সে দশ সেরের অধিক ভার কখনই সহ্য করিতে পারে না । অথবা সকল ছাত্রেই রায়চাদ প্রেমচাদ পরীক্ষা দিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু তাহা কয়জনের শক্তিতে সংকুলান হয় ? এই নিমিত্ত সাধন সম্বন্ধে বিচার করিতে হইলে পাত্র বিচার সৰ্ব্বাগ্রে কৰ্ত্তব্য । সাধন লইয়া আলোচনা করিতে হইলে দেশ, কাল, পাত্র এবং উদ্দেশ্য, এই চারিটী বিষয় বিচার করিলে তবে সাধনের মীমাংস। তইতে পারে। পূর্বেই বলিয়াছি যে, সকলের উদ্দেশ্য এক প্রকার নহে । ধৰ্ম্মাকুষ্ঠান করিতে দেখিলেই যে সকলকে এক শ্রেণীতে নিবদ্ধ করিতে হইবে, তাহা নহে। কেহ সাংসারিক সুখের নিমিত্ত ভগবানকে ডাকেন, কেহ মোকদ্দমা জয়ী হইবার জন্য ভগবানকে ডাকেন, কেহ পুত্রের জন্য ভগবানের শরণাপন্ন হন, কেহ পরজন্মে ইন্দ্রতুল্য অবস্থাপন্ন হইবেন বলিয়া ভগবানের অর্চনা করেন, কেহ মুক্তি লাভের জন্য ভগবানের ভজনা করিয়া থাকেন এবং কেহ ভগবানের সহিত সাক্ষাৎকারের নিমিত্ত তাহার সাধনা করিয়া থাকেন। প্রত্যেক ব্যক্তির এই প্রকার কাৰ্য্যকে সাধনা বলা যায় বটে, কিন্তু উদ্দেশ্য বিচার করিলে যে কতদূর ফলের তারতম্য হইবার সম্ভাবনা, তাহ অনায়াসে উপলব্ধি করা যাইতে পারে। যে ব্যক্তি পুত্রের বাসনায় ভগবানের সাধনা করেন, র্তাহার মনোরথ সিদ্ধ হইলে সেই অবস্থার সহিত কি মুক্ত পুরুষের অবস্থার তুলনা হয় ? উভয় ব্যক্তি সাধনা করিলেন বটে, উভয় ব্যক্তি এক ঈশ্বরের অর্চনা করিলেন বটে, কিন্তু স্বতন্ত্র উদ্দেশ্য থাকিবার জন্ত সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ফল ফলিয়া থাকে । এই নিমিত্ত ঈশ্বর সাধনা স্থির করিতে হইলে সৰ্ব্বপ্রথমে উদ্দেশ্য নিরূপণ করা কৰ্ত্তব্য। কোন সাধনা করিব ?