পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৭e ] সেই গৃহীর স্থান কোথায় ? তিনি কোথায় দাড়াইবেন ? নিজের বল নাই, কেহ দয়া করে না। নিজের ধন নাই, কেহ ধন দেয় না । সে অবস্থায় তাহার উপায় কোথায় ? তাহার এমন শক্তি নাই যে, কাহাকে ডাকিয় আপনার দুঃখ জানায়, সে পথপ্রান্তে পতিত মুমুধু দশাপ্রাপ্ত দীনহীনের প্রতি কাহার কটাক্ষ না পড়িলে তাহার গতি মুক্তি হয় না। যিনি যত ধনী হউন, যত দয়ালু হউন, সম্পত্তিবিহীনবিহীন কাঙ্গালকগঙ্গালিনীর প্রতি কাহারও অধিকার নাই । রাজাই তাহাদের আশ্রয় স্থান । তাই মহারাণীর রাজ্যে সেই ব্যবস্থা দেখা যায়। তাই পথের ধারে পড়িয়! থাকিলে পাহারাওল হাসপাতালে লইয়া যায়, তাই অনাথার জন্য রাণী মাতার সুব্যবস্থা আছে, তাই অনাথ অনাথারা মরিয়া যাইলে তাহদের গতির নিমিত্ত জাহ্নবী কূলেও স্থান দিবার ব্যবস্থা করিয়াছেন। মহারাণী মাত যে নিয়মে কাৰ্য্য করেন, তাহাই ব্ৰহ্মময়ী মাতার নিয়ম। তাহার বিশেষ বিভূতির দ্বারা মহারাণীর আবির্ভাব, তাই তাহার হৃদয়ে পতিতপাবনা অনাথতারিনীর ভাব কাৰ্য্য করিতেছে, যে গৃহীর এইরূপ অবস্থ হয়, সেই গৃহীই ব্রহ্মময়ীর দৃষ্টিগোচর হন, যে গৃহী অনাথ, তাহার জন্য ব্রহ্মময়ী কাতর। যে গৃহী সংসার ও সমাজভ্ৰষ্ট হইয়া কাতর ভাবে কাদিতে কঁাদিতে বলে যে, "হায় রে! আমার কি কেহ নাই ; আমায় দয়া করে এমন কি কেহ নাই, আমায় এক মুষ্ঠা অন্ন দিয়া জঠরানল নিবারণ করে, এমন দয়াময় দয়াময়ী কি কেহ নাই ?” দয়াময়ী কি আর দেখিতে পারেন ? কাঙ্গালের আর্তনাদে কাঙ্গাল জননী অস্থির! হন । তিনি কখনই স্থির থাকিতে পারেন না। যে শিশু আত্মরক্ষায় অশক্ত, জননীর দৃষ্টি সেই দিকেই অধিক থাকে। সে চুপ করিয়া শুইয়া থাকিলেও মাতা মধ্যে মধ্যে দেখিয়া যান যে, শিশুর কোন ক্লেশ হইতেছে কি না । নাসিক